How to overcome laziness in bangla

কিভাবে অলসতা কাটিয়ে উঠবেন

How to overcome laziness in Bangla||কিভাবে অলসতা কাটিয়ে উঠবেন

অলসতা কি?অলসতা হলো কর্মহীন থাকার ইচ্ছা,কোনো কিছু করতে না চাওয়া ও উৎসাহিত থাকা ।এক প্রকার নিষ্ক্রিয় থাকার ইচ্ছার নাম অলসতা। মাঝে মধ্যে টানা অনেক ঘন্টা কাজ করার পর সামান্য অলসতা আসলে  সেটা পরম উপভোগ্য অথবা প্রচণ্ড শীতের মাঝে বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছে করছে না এমন কিছু হলেও সেটাকে গুরুতর কিছু না ভাবা'ই  ভালো। কিন্তু এটা একটা মারাত্মক রোগ হয়ে দাঁড়ায় যখন উঠতে বসতে,কাজ করতে গেলে অলসতা এসে আপনার স্বাভাবিক গতিতে থামিয়ে দেয় ।


যদি খুব বেশি এমনটা হয় তাহলে বুঝবেন আপনি অলসতায় আসক্ত হয়ে পড়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব এর থেকে আপনাকে বের হয়ে আসতে হবে। আমাদের প্রতিদিনের কাজ অথবা কোন কিছু খুব  যত্ন নিয়ে দক্ষতার সাথে করতে চাইলে এমনকি একটি সুন্দর ও সুস্থ জীবন যাপনের জন্য সবার আগে জানতে হবে কিভাবে অলসতার ব্যাধি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখা যায়। একজন সফল মানুষের সফলতার পথে সবচেয়ে বড় বাঁধার নাম অলসতাকে জয় করা। চলুন তাহলে জেনে নেয়া  যাক অলসতা দূর করার অসাধারন কিছু টিপস যা আপনাকে অনেক বেশি দক্ষ ও পরিশ্রমী করে তুলবে।


একটি কাজকে ছোট ছোট অনেক কোন অংশে ভাগ করে নিন। আমরা অনেক সময় বেশ বড় এবং জটিল কোনো কাজ হলেই ঘাবড়ে যাই।এ কাজটি করতে গেলে অনেক সময় লাগবে,বেশ পরিশ্রমের কাজ এমন ভাবনা থেকে কাজ করার ইচ্ছেটা চলে যেতে থাকে কিংবা কিছুদিন কাজ চালিয়ে যাবার পর এক পর্যায়ে ছেড়ে দেই। এমন ক্ষেত্রে সহজেই সমস্যা থেকে সমাধান করতে পারেন ।এজন্য আপনার কাজকে ছোট ছোট অনেকগুলো ইউনিটের ভাগ করে নিন। প্রতিটি কাজের জন্য প্রয়োজন বুঝে সময় নির্ধারণ করুন ।



এতে করে যেটা হবে আপনি যখন ছোট ছোট একটি অংশের কাজ করতে যাবেন  তখন পুরো কাজের চাপ একসাথে আপনার মাথায় নিতে হবে না।আপনি খুব সহজেই অল্প পরিশ্রমের মাধ্যমে ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত প্রতিটি অংশের কাজ করে ফেলতে পারবেন। আপনার কাছে তখন কাজটি আর আগের মত জটিল কিংবা সময় সাপেক্ষ মনে হবেনা ।চাপমুক্তভাবে আপনি কাজটি চালিয়ে যেতে পারবেন। যেহেতু আপনি কাজটি চাপমুক্ত ভাবে চালিয়ে যেতে পারছেন এর ফলে কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ বেড়ে যাবে অনেক গুণ এবং দূর হয়ে যাবে অলসতার এবং অনীহা।

How to overcome laziness

How to avoid procrastination and laziness

How to avoid laziness in life

বিশ্রাম,ঘুম এবং ব্যায়াম 

অনেক সময় কাজের প্রতি অনীহা তৈরি হওয়ার কারণ শারীরিক দূর্বলতা,অনিদ্রা অথবা  দীর্ঘসময়ের ক্লান্তি। যদি মনে করেন উপরের কারণগুলোর জন্যই কাজের প্রতি আপনি মনোযোগ রাখতে পারছেন না তাহলে আপনার উচিত প্রথমেই বিশ্রাম নেয়া।পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে নিন। বিশ্রামকালীন এই সময়টাতে ব্যায়াম করুন। পারলে শরীরে প্রকৃতির মুক্ত বাতাস দিন। আপনি অনেক বেশি চাঙ্গা হয়ে উঠবেন,কাজের আনন্দ ফিরে পাবেন।

অনুপ্রেরণা 

অনেক ক্ষেত্রে অলসতার মূল কারণ থাকে উৎসাহ-উদ্দীপনার অভাব। নিজেকে জাগাতে আপনি  বিখ্যাত মানুষের জীবনী,তাদের সফলতার গল্প, মনীষীদের বাণী বা তাদের জীবন দর্শন জানুন। অলসতা দূর করতে  এগুলো খুব বেশি কাজে লাগবে। তাছাড়া আপনি যে কাজটি করতে যাচ্ছেন তার গুরুত্ব নিয়ে ভাবুন।খুব পজিটিভলি ব্যাখ্যা করুন যে কাজটি শেষ করলে আপনি কি কি সুবিধা পাচ্ছেন,কতটা ভূমিকা রাখতে পারে এই কাজের সাফল্য।এভাবে আপনি কাজের প্রতি নিজেকে অনুপ্রাণিত রাখতে পারেন। এর ফলে নিশ্চিতভাবে আপনার অলসতা অনেকটাই কমে যাবে। 

আপনি যা হতে চান অথবা যা করতে চান তার একটি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য ঠিক করুন

আপনি যা হতে চান তা নিয়ে একটি পরিষ্কার ছক তৈরি করে ফেলুন যেন চোখ বন্ধ করলেই আপনার সামনে ছবির মতো সম্পূর্ণ ব্যাপারটি ঘটতে দেখেন। আপনি যা অর্জন করতে চান সেটা নিয়ে কল্পনায় একটি ঘটনা তৈরি করুন অথবা যেমন করে আপনি জীবন যাপন করতে চান সেটা নিয়ে খুব সুন্দর এবং গোছানো একটি স্বপ্ন দেখুন।আপনার এই কাল্পনিক ভাবনাগুলো নিয়ে সুযোগ পেলেই ভাবতে থাকুন।এগুলি আপনাকে অনেক বেশি উদ্যোমী করে তুলবে।ফলে অলসতার জায়গা হবেনা আপনার প্রতিদিনের কাজকর্মে।

সুবিধা নিয়ে ভাবুন

আমাদের সবার একটি কমন সমস্যা হচ্ছে কোন কাজ করতে গেলে তার ভালোটা নিয়ে ভাবার আগেই খারাপ চিন্তা গুলো আগে মাথায় নিয়ে নিই। আপনি যদি পড়ে যাওয়ার ভয়ে সাইকেল চালানোর সাহস না করতেন তাহলে আপনি সাইকেল চালানোটা শিখতে পারতেন না।তাই  যে কাজটি করতে চাইছেন তার সমস্যা অথবা জটিলতা নিয়ে না ভেবে ভাবুন যে সফলতাকে জয় করে আপনি যদি কাজটি ঠিক মতো করে ফেলতে পারেন তাহলে আপনি কি কি পাচ্ছেন। সমস্যা নিয়ে ভাবলে কখনো কাজ এগুবে না বরং নিরুৎসাহিত হয়ে কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন আপনি। অলসতা আপনাকে অক্টোপাসের মতো জড়িয়ে ধরবে।

ফলাফল নিয়ে ভাবুন 

আপনি যদি অলসতা করে কাজটি সময় মত ঠিক ভাবে না করতে পারেন তার পরিণাম কি হতে পারে,এর ফলে আপনি কতটা পিছিয়ে যাচ্ছেন, আপনার কতটা ক্ষতি হচ্ছে,কী ঘটতে যাচ্ছে এসব পরিণামের কথা ভাবুন।আপনি যদি কাজে ব্যর্থতার অনুতাপ এখনই অনুভব করতে পারেন তাহলে নিশ্চিত সময় থাকতে আপনি সময়ের অপব্যবহার কোনভাবেই করতে চাইবেন না। এই চিন্তা আপনাকে কাজের প্রতি আরও আগ্রহী করবে,আপনি প্রচন্ড প্রভাবিত হবেন কাজটি শেষ করতে।


একবারে একটি কাজই করুন 

একবারে একাধিক কাজ না করাই ভালো।তার চেয়ে  আপনি যদি একটি একটি করে কাজে মনোযোগী হন তবে চাপমুক্ত ভাবে কাজটি শেষ করতে পারবেন। অনেক গুলো কাজ একসাথে করতে গেলে এলোমেলো হয়ে কাজের চাপে পড়ে মনোযোগ হারানোর ভালো সম্ভাবনা থাকে। এতে আপনি অলসতাকে কি জয় করবেন অলসতাই  আপনাকে জয় করে বসবে।

অন্যদিকে একটি করে কাজ শেষ করলে আপনি যথেষ্ট মনোযোগ দিয়ে যত্নসহকারে কাজটি শেষ করতে পারবেন।তাই বলছি একবারে একটি কাজ করুন একাধিক নয়।

কল্পনা 

মন,অভ্যাস ও কাজের ক্ষেত্রে অনেক বড় প্রভাব থাকে  কল্পনা শক্তির।আত্মবিশ্বাস আসে এমন একটি  শক্তি থেকে যেন আপনি আপনার সাফল্য দেখতে পাচ্ছেন ।এমন অবস্থায় আপনি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারবেন কাজটি করার জন্য সেই শক্তি অথবা প্রেরণা আমার আছে।আপনি বলবেন,আমি যা চাই তাই করি বা করতে পারি।কোন কাজ করার আগে তাই ভাবুন খুব সহজে প্রচন্ড উদ্যোমে আর আনন্দে কাজটি করে যাচ্ছেন আপনি। এটা বিশেষভাবে কাজে লাগবে যখন আপনি ভীষণভাবে অলসতা অনুভব করবেন তখন অথবা আপনি যেটা করতে চাইছেন আপনার মন সেটা করতে দিতে চাইছে না এমন অবস্থায়।

কাজকে অনুশীলন হিসেবে ভাবুন।

প্রতিটি কাজকে আপনার অনুশীলন হিসেবে বিবেচনা করুন।নিজের ভিতর এই বিশ্বাস তৈরী করুন যে এর ফলে আপনি আরো দক্ষ হয়ে উঠছেন।আপনার জ্ঞান ও পারদর্শীতা বাড়ছে।আপনি নিজেকে আরও শক্তিশালী হিসেবে প্রস্তুত করছেন এই কাজের মাধ্যমে।এই  ভাবনাগুলো আপনাকে  আগের চেয়েও আরো বেশি দৃঢ় সংকল্প এবং অনেক বেশি নিশ্চিত হতে শেখাবে।অলসতাকে কখনোই প্রশ্রয় দেবে না এমন ভাবনা।


How to avoid procrastination and laziness

 দীর্ঘসূত্রিতা

 কাজের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করুন। দীর্ঘসূত্রিতা অলসতা তৈরির অন্যতম একটি কারণ। যদি আপনার সত্যিই কিছু করার থাকে তাহলে এখনই কেন শুরু করছেন না?কেন আপনি সেটা নিয়ে নেই? কেন আপনার পরিকল্পনাকে শুধু মাথায় নিয়ে বসে আছেন? আপনার অলসতা দূর করার এখনই সময়। কাজে নেমে যান,ঝাঁপিয়ে পড়ুন। মনে রাখবেন দীর্ঘসূত্রিতার অপর নাম অলসতা। 

সফল লোকদের থেকে শিখুন

সফল মানুষদের দেখুন কিভাবে তারা অলসতাকে দূর করেছে।তাদের কাছে শিখুন,তাদের সাথে কথা বলুন এবং তাদের সাথে কাজ করুন। অলসতাকে জয় করতে হলে প্রতিদিনের কাজে ধারাবাহিক নিয়ম মেনে চলুন। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চললে আপনি সতর্ক থাকতে পারবেন। আপনি অলসতা দূর করার চেষ্টা চালাচ্ছেন এর অর্থ হচ্ছে আপনি আগের চেয়ে আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠছেন।আপনি আপনার নিজস্ব একটি পরিকল্পনা অনুসরণ করছেন। আপনার জয়ের সামর্থ্য বাড়ছে,লক্ষ্য অর্জন করছেন। ধাপে ধাপে আপনার জীবন উন্নতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।আপনার জীবনে অলসতার কোন স্থান নেই।

আপনার আশেপাশে যদি এমন কোনো মানুষ থাকে যাদের পোস্টটি  পড়া উচিত বলে মনে করেন তাহলে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করবেন।

Post a Comment

0 Comments