Translation re
জীবনটা আসলেই কি অদ্ভুত!মেয়েটি কখনো স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি জীবন তাকে এমন একটি অবস্থানে এনে দ্বার করাবে।যে মেয়েটা ঘরকুনো ছিল,ঘরের বাইরে একদিনের জন্যও থাকা যার জন্য নিরাপদ মনে করতোনা,ঘরকে তার পুরো পৃথিবী বানিয়েছিলো সেই মেয়েটি আজ বাবা মা আপনজনদের ছেড়ে একাকিত্বের জীবন বেছে নিয়ে ব্যাচেলরের খাতায় নাম লিখিয়েছে।
পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করেছে একা থাকতে,একা পথ চলতে।আপনজন সবাই থাকতে সেই আজ একা।অবশ্য তাতে এখন আর তার কোনো আফসোস নেই ।
তার এখনো মনে আছে সেই ভয়ঙ্কর দিনের কথা যেদিন পরিবারের সবাই মিলে তাকে জবরদস্তি কোরবানির গরুর মতো চেপে ধরেছিলো আর তাদের হাঁ'তে হাঁ মিলাতে বলেছিলো।সেই দিনটির কথা সেই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ভুলবে না।এতো অত্যাচার সহ্য করেও সে তার সিদ্ধান্তে অটল ছিল।
বাবা মা নাকি সন্তানের সবচেয়ে বড় বন্ধু হয়।কিন্তু সেই মেয়েটি তার বাবা মা কে কখনো বন্ধুরূপে পায় নি।শুধুমাত্র তাদের কাছে কড়াশাসন আর রক্তচক্ষুর শাসানি ছাড়া।কি ছিল তার দোষ!একটু বাবা,মা,ভাই,বোনের ভালোবাসাইতো চেয়েছিলো সে।কেন তাকে অবহেলিত হতে হলো?দিনের পর দিন সেই একাকীত্বে আর অবহেলায় দিন কাটিয়েছে।কারো কাছে তার জন্য একটু সময় হয়নি,তার সাথে ৫টি মিনিট কাটানোর,তার মনের কথা গুলো শোনার।তার ভালো কোনো বন্ধুও ছিলো না।
ব্যাচেলর জীবনের গল্প || bachelor's life || happiness
সেই মেয়েটি আজ একাকিত্বকেই তার বড় শক্তি বানিয়ে নিয়েছে।এক থাকাটাই তার পছন্দে পরিণত হয়েছে।নিজের সাথে সময় কাটানো,নিজেকে খুশি রাখা,নিজেকে উপহার দেয়া,নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য স্ট্রাগল করা শিখে গেছে সে।
তবে সে তার ব্যাচেলর লাইফেও কাউকে আপন পায়নি।যারা তার সাথে রুমমেট হিসেবে থাকে সবাই নিজ নিজ জায়গায় স্বার্থপর।সে প্রথম প্রথম তাদের আপন করতে চেয়েছিলো।উজাড় করে তার সব ভালোবাসা দেখিয়েছিলো।কিন্তু সে জানতো না সে ভালোবাসা নেয়ার যোগ্যতা তাদের নেই।সবাই স্বার্থপর।স্বার্থের জন্য শুধু তাকে ব্যবহার করে।এখন সে নিজেও তাদের মতো স্বার্থপর হওয়ার চেষ্টা করছে।স্বার্থপর হলেই জীবনে ভালো থাকা যায় কিনা ।
তাও সেও এখন অনেক সুখী,নিজের একাকী জীবনই তার পছন্দ।ভালোই কাটছে তার ব্যাচেলর লাইফের দিনগুলি।এখন আর কেউ তার জীবনের উপর জুলুম করতে আসে না।অন্য কারও কঠোর সিদ্ধান্ত তার উপর চাপিয়ে দেয়না।তার নিজের জীবন নিজের মতোই যাপন করছে সে।তাকে আর আগের মতো সব সময় ভীত সন্ত্রস্থ থাকতে হয়না।কথায় কথায় কটু কথার শাসানিও শুনতে হয় না।সে তার সেই কষ্টের দিন গুলো থেকে বেরিয়ে এসেছে।মুক্তি মিলেছে তার মানব সত্ত্বার।
এখন শুধু সে নিজের কথা ভাবে,নিজের ভালোর জন্য ভাবে,নিজের স্বপ্নের জন্য ভাবে,নিজেকে একটি নতুন পরিচয় দিতে চায়।তাইতো সে সেই লক্ষ্যে কষ্ট করে যাচ্ছে দিনের পর দিন।সফল তাকে হতেই হবে।সে জানে কষ্ট ছাড়া সফলতা আসেনা ।আর সেই সফলতা আসলেই তার জীবনের সার্থকতা।
তার নিজের একটি নতুন পরিচয় বানিয়ে সে তাদের দেখিয়ে দিবে যাদের কাছ থেকে অবহেলা আর যন্ত্রনা পেয়েছে।বুঝিয়ে দিবে সেও তার জীবনকে গুছিয়ে নিয়েছে।সে পুরোনো অবহেলিত, নিষ্পেষিত মেয়েটি সে এখন আর নেই।
এটা সত্যি যে সে সবসময় তার পরিবারের মাঝেই থাকতে চেয়েছিলো।পরিবারের ভরপুর ভালোবাসা চেয়েছিলো।তবে সে চায় সব সন্তান তার পরিবারের কাছে ,পিতামাতার কাছে যত্নে ভালোবাসায় থাকুক।আর কারো জীবন যেন তার মতো না হয়।সব সন্তান যেন সুখে থাকে।
আফসোস নেই তার জীবনে যা সে পায়নি,যা তার জীবন থেকে হারিয়ে গেছে তার জন্যও ।জীবনে সব কিছু পেতেও তো নেই তাইনা! তবে সে জানে নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতার জন্য,মুখ তুলে সাহস করে কথা বলার জন্যও নিজের একটি শক্ত অবস্থান তৈরী করা প্রয়োজন। এখন সে নতুন কিছু,ভালো কিছু পাওয়ার আশায় আছে,নতুন একটি সুন্দর ভোরের প্রত্যাশায় আছে ।
এইতো তার ব্যাচেলর লাইফ কেটে যাচ্ছে নিশ্চিন্তে।সে আর তার স্বপ্নকে সঙ্গে করে নিয়ে।পুরোদমে চলছে স্বপ্ন পূরণের কাজ।স্বপ্ন পূরণ হবে একদিন,নিশ্চয় হবে একদিন।সেই দিনের অপেক্ষা...........
আরো পড়ুন: অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো উক্তি
0 Comments
Please don't enter any spam links in the comment box.