8 benefits of being alone||
একা থাকার ৮ টি উপকারিতা
প্রতিটি ব্যক্তির জীবনে এমন একজন ব্যক্তি অবশ্যই থাকে যে কিনা জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে থাকে ।আর সেটা হল সে নিজেই। এই পৃথিবীতে বেশিরভাগ ভিড়ভাড়,হাসি,হুল্লোড় এই সমস্ত জিনিস কে ভালোবাসে। কিন্তু এই পৃথিবীতে খুব কম সংখ্যক লোক রয়েছে যারা একা থাকতে ভালোবাসে ।একা থাকাটা কিন্তু কোন খারাপ ব্যাপার নয় বরং একা থাকার বহু সুবিধা রয়েছে।যারা একা থাকতে ভালোবাসে অর্থাৎ যারা বেশি হৈ হুল্লোড় পছন্দ করে না,বেশি ভিড়ভাড় পছন্দ করে না সেই সকল ব্যক্তিদের মাইন্ড কিন্তু সাধারণ ব্যক্তিদের তুলনায় অনেকটা পাওয়ারফুল হয়ে থাকে ।ইনফ্যাক্ট এই সকল ব্যক্তিদের থিংকিং পাওয়ার অনেক ডিপ হয়ে থাকে এবং এদের ব্রেইনও অনেক শার্প হয়ে থাকে।
আর আজকের এই পোস্টে আপনি একা থাকার এমন ৮টি সুবিধা কে জানতে চলেছেন যা আপনাকে কেউ বলেনি।
8 benefits of being alone
নাম্বার ওয়ান
ইউনিট পার্সোনালিটি /Unique Personality
যে সকল ব্যক্তিরা একা থাকতে ভালোবাসে তারা খুব ইউনিক হয়ে থাকে।এসব ব্যক্তিরা সবার থেকে আলাদা হয়ে থাকে।দেখুন এই কথাটি তো আপনি অবশ্যই কোন না কোন সময় অবশ্যই শুনেছেন যে,প্রতিটি ব্যক্তির মধ্যেই কিছু না কিছু গুণ বা ট্যালেন্ট রয়েছে।নিশ্চয়ই শুনেছেন তাইনা! কিন্তু সেই গুন বা ট্যালেন্টকে আপনি আপনার মধ্যে কিভাবে খুঁজে পাবেন? আপনি আপনার সেই গুন বা ট্যালেন্টকে তখনি খুঁজে পাবেন যখন আপনি নিজের সাথে টাইম কাটাবেন । যে ব্যক্তি দৈনিক কাজে ব্যস্ত,যে ব্যক্তি বিশ্বসত্ত্বায় ব্যস্ত,যে ব্যক্তি বিনোদনে ব্যস্ত সে তো তার নিজের রিয়েল কোয়ালিটিকে নিজের এক্সিস্টেন্সকেই হারিয়ে ফেলে। সে অন্যের ক্যারেক্টার দ্বারা এতটা ইফেক্টেড হয়ে যায় যে সেই ব্যক্তি নিজের উনিকনেস(uniqueness)কে হারিয়ে ফেলে। কিন্তু যে ব্যক্তি একা থাকতে ভালোবাসে সে তার এক্সিস্টেন্সকে (Existence)কে কখনো হারায় না। এই ধরনের ব্যক্তির এক ডিফারেন্স ইমেজ থাকে, তার নিজের কিছু রুলস থাকে। সে কারো উপর প্রভাবিত না হয়ে নিজের লাইফকে নিজের মতো করে উপভোগ করে।
নাম্বার ২
পসিটিভ অ্যাটিটিউড/Positive attitude
যখন আপনি লোকেদের মাঝে থাকা শুরু করেন তখন মনে মনে একে অপরের সাথে comparison শুরু হয়। লোকেরা একে অপরের দুর্নাম করে। কারো মধ্যে যদি কোন একটি ভাল গুণ থাকে তো লোকেরা সবাই মিলে তার উপর হিংসা শুরু করে। কিন্তু যখন আপনি একা থাকেন তখন আপনি এই comparison থেকে বিরত হয়ে যান।আপনাকে জাজ করার মত আর কেউ থাকে না আর না আপনি কাউকে জাজ করেন যে তার মধ্যে ওই দোষ আছে,আমার মধ্যে এই দোষ আছে।
At the same time ,যখন আপনি একা থাকেন নিজের সাথে টাইম স্পেন্ড করেন তখন আপনি নিজেকে আরো ভালোভাবে বুঝতে শেখেন ।নিজেকে জানতে শেখেন, নিজেকে প্রশ্ন করতে শেখেন যেমন কোন গুণ রয়েছে আমার মধ্যে যা আমাকে অন্যদের থেকে আলাদা তৈরি করে? এমন কি আছে আমার মধ্যে যা অন্য কারো কাছে নেই?তো যখন আপনি নিজেকে প্রশ্ন করবেন,নিজেকে বুঝবেন,নিজেকে জানবেন তখন আপনি নিজের মধ্যে এক প্রকার পজিটিভ এনার্জিকে ফীল করা শুরু করবেন এবং আপনি নিজের ব্যাপারে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
নাম্বার থ্রী
সেল্ফ রেসপেক্ট/self-respect
যারা এক থাকতে ভালোবাসে তারা কোনো ব্যাপারে তর্কে জড়ায় না। তারা কারো কোন খারাপ আলোচনা করে না।যদি সে কারো ব্যাপারে খারাপ না বলে তাহলে অন্যরাও তার ব্যাপারে খারাপ বলবে না।যদি আপনি বহু লোক দ্বারা আকৃষ্ট হয়ে থাকেন এক্ষেত্রে সেখানে আপনার রেসপেক্ট কমতে শুরু করে ,লোকেরা আপনাকে হালকাভাবে নিতে শুরু করে ।
নাম্বার ফোর
ক্রিয়েটিভ মাইন্ড /Creative mind
একা থাকতে ভালোবাসার লোকেরা ক্রিয়েটিভ মাইন্ডের হয়ে থাকে। আর এটা এই জন্যই কারন এক থাকার কারণে তাদের ব্রেইন ভাবনার জন্য অনেক সময় পেয়ে যায় ।কোন প্রকার disturbance থাকে না।যে কারণে তারা কোন বিষয়কে ভালোভাবে ডিপলি ভাবতে ও এনালাইজ করতে পারে ।
নাম্বার ফাইভ
সেলফ ডিপেন্ডেন্ট
যে সকল ব্যক্তিরা একা থাকতে ভালোবাসে সেই সকল ব্যক্তিরা self-dependent হয়ে থাকে। এই সকল ব্যক্তিরা কোন প্রকার কাজে বা ব্যাপারে কারো উপর ডিপেন্ডেন্ট থাকেনা। এই সকল ব্যক্তিরা নিজের কাজকে নিজে করতে ভালোভাবে জানে ।আর এটা সত্যিই খুবই ভাল একটি গুণ।কারণ আজকাল এই পৃথিবীতে বেশিরভাগ লোকেরই খুব স্বার্থপর হয়ে থাকে। কারো কাছ থেকে যদি আপনি সামান্য পরিমাণও হেল্প নিয়ে নেন সে আপনাকে সারাজীবন সেটা শোনাতে থাকবে ।কিন্তু যদি আপনি একা থাকেন ,self-dependent হন তাহলে আপনি আপনার কাজকে নিজেই ভালোভাবে করতে জানবেন।
8 benefits of being alone
নাম্বার সিক্স
মেন্টালি এন্ড ইমোশনালি স্ট্রংনেস /Mentally and emotionally Strongness
যে সকল ব্যক্তিরা একা থাকতে ভালোবাসে তারা মেন্টালি এবং ইমোশনালি দুই দিক দিয়েই স্ট্রং হয়ে থাকে।কারণ এরা জানে যে যদি এদের সামনে কোন প্রবলেম চলে আসে তাহলে তাদেরকে একাই এই প্রবলেম থেকে বের হতে হবে। আমাকে নিজেই এই প্রবলেম থেকে ওভারকাম করতে হবে আর এটা বারবার করতে থাকার ফলে আপনার মধ্যে কনফিডেন্স বাড়তে শুরু করে এবং আপনি মেন্টালি এবং ইমোশনালিও স্ট্রং হতে শুরু করেন।
নাম্বার সেভেন
মোর প্রডাক্টিভ/More productive
এক থাকার ৭ নাম্বার কোয়ালিটি হলো এই যে এই সকল ব্যক্তিরা অন্যদের তুলনায় অনেক গুণ প্রডাক্টিভ হয়ে থাকে ।একা থাকার কারণে কোন প্রকার Disturbance থাকেনা আর না কেউ থাকে বাঁধা দেয়ার জন্য। আর এই কারণের জন্য এই সকল ব্যক্তিরা কোন কাজে তাদের বেস্ট ইনপুট কে দিতে পারে।এরা কোন নরমাল ব্যক্তির তুলনায় কয়েকশগুন বেশি প্রডাক্টিভলি কোন কাজকে করতে পারে।
নাম্বার এইট
হাই সাকসেস রেট/High success rate
যে সকল ব্যক্তিরা একা থাকে তাদের ৮ নাম্বার কোয়ালিটি হলো এই যে এদের সাকসেস রেট অনেক বেশি হয়।এই সকল লোকদের সাকসেস হওয়ার চান্স অনেক বেশি হয় অন্যান্য ব্যক্তিদের তুলনায়।কারণ এদের নিজেদের কিছু ফাণ্ডামেন্টালস(Fundamental)রয়েছে।এদের নিজেদের কিছু রুলস রয়েছে। একা থাকার কারণে এরা নিজেদের উপর ভালোভাবে কাজ করতে পারে।নিজের লাইফকে ভালোভাবে প্ল্যান করতে পারে। নিজের টার্গেটকে সেট করতে পারে।আর নিজেকে বুঝে,নিজেকে জেনে নিয়ে যখন কোন ব্যক্তি কোন প্ল্যানিং করে যখন সে জেনে যায় যে তার ক্যাপাবিলিটি কতটা, আমার নিড কি,আমার রিস্ক টেকিং পাওয়ার কতটা, কোন ধরনের অ্যাচিভমেন্ট আমার জন্য সাকসেস।তো এই ধরনের ব্যক্তি অন্য কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে এতগুলি গুনকে নিজের মধ্যে কনসিডার করে যখন নিজের গোলের পেছনে ছুটে তখন অটোমেটিক্যালি সাকসেস হওয়ার চান্স অন্যদের তুলনায় কয়েকগুন বেড়ে যায় ।
এবার প্রশ্ন হল এই যে, একা থাকার অর্থ কি এবং কিভাবে আমিও একা থাকবো?একা থেকে নিজেকে স্ট্রং,ক্রিয়েটিভ এবং প্রডাক্টিভ কিভাবে গড়ে তুলবো?দেখুন একা থাকার মানে এই নয় যে আপনি নিজেকে একটি ঘরে বন্ধ করে দিন।নিজের পরিবারের থেকে, নিজের বন্ধুবান্ধব,আত্মীয়-স্বজন,নিজের কর্মক্ষেত্র থেকে আলাদা হয়ে যান।এমনটা নয়। একা থাকার অর্থ হলো এই যে,যেসকল নেগেটিভ ব্যক্তিরা আপনার চারপাশে রয়েছে বা যে নেগেটিভ লোকেদের একটি সার্কেল আপনি আপনার লাইফে বানিয়ে রেখেছেন,সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ফেইক ফ্রেন্ডদেরকে আপনি একসেপ্ট করে রেখেছেন সেই সকল ব্যক্তিদের থেকে আলাদা হয়ে নিজের জন্য, নিজের ফ্যামিলি, নিজের রিয়েল ফ্রেন্ডদের জন্য,নিজের গোলের জন্য, নিজের ড্রিমের জন্য টাইম স্পেন্ড করা।
আমি বলছি না যে সফল হওয়ার জন্য একা থাকাটা জরুরি।আমি এটা বলছি না ।কারণ তাই যদি হতো তাহলে কেউ আর ক্রিকেটার হতে পারত না ।কারণ সেখানে তো টীম ওয়ার্কের প্রয়োজন।কিন্তু যদি আপনি সিচুয়েশনেই কারণে একা হয়ে থাকেন সিচুয়েশনাল একা থাকা অর্থাৎ কোনো কারণবশত একা থাকেন বা নিজের জন্য প্রতিদিন কিছু সময় বের করেন।যেমন -সকালে হয়তো এক ঘন্টা আগে উঠে পড়লেন এবং নিজের ব্যাপারে ভাবলেন,নিজের জন্য,নিজের গোলের জন্য কাজ করলেন ।এই সময় আপনি কারো ব্যাপারে ভাবলেন না ।শুধুমাত্র নিজের ব্যাপারেই ভাবলেন।এটাকে বলে একা থাকা বা একান্ত স্বতন্ত্র থাকা।
একা থাকার অর্থ গুলো নিজের সাথে কানেক্ট থাকা। সব সময় একা থাকা জরুরী নয় কিন্তু সারাদিনে কমপক্ষে এক ঘন্টা বা আধা ঘন্টা নিজের জন্য সময় বের করে নিজের লাইফকে এনালাইজ করুন ।নিজেকে প্রশ্ন করুন ।নিজের মনে উঁকি দেওয়ার চেষ্টা করুন ।নিজেকে জানুন,নিজেকে বুঝুন যে আপনি কি করতে চান আর আপনি করছেন কি !বাইরের জগতের চক্করে আপনার নিজের এক্সিস্টেন্স শেষ হয়ে যাচ্ছে না তো! আপনার যে ভ্যালুজ রয়েছে,যে সম্মান রয়েছে তা অন্যের কারণে ডিস্টার্ব হচ্ছে না তো!অন্যের কথা ভাবতে ভাবতে আপনি নিজের ব্যাপারে ভাবা ভুলে যাননি তো! যদি হ্যাঁ হয় তাহলে নিজের জন্য সময় বের করুন। সারা দিনে কমপক্ষে ১ আধঘন্টা জন্য সময় বের করুন এবং নিজের ব্যাপারে ভাবতে শুরু করুন ।এতে কি হবে? এতে ধীরে ধীরে আপনি নিজেকে বুঝতে শিখবেন,নিজেকে জানতে শিখবেন ।নিজেকে বেটার বানাতে শিখবেন।
0 Comments
Please don't enter any spam links in the comment box.