ApJ Abdul kalam biography
APJ Abdul Kalam biography/Abdul kalam life story
Inspirational story/short story
story online/short story in bangla
তামিল নাড়ু রাজ্যের উপকূল সংলগ্ন রামেশ্বরামের দরিদ্র দম্পতি জয়নুল আবেদীন ও আশিয়াম্মা স্বপ্নেও ভাবেননি তাদের ছেলে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে ভারতকে নেতৃত্ব দেবে। এমনকি দেশের রাষ্ট্রপ্রতির আসন অলংকৃত করবেন। কিন্তু সেই দরিদ্র বাবা-মার সন্তান আবুল পাকির জয়নুল-আবেদিন আব্দুল কালাম দেখিয়ে দিয়েছিলেন তিনি ভারতের শীর্ষ বিজ্ঞানী প্রশাসক। বিজ্ঞানী এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে ভারতে তার অবদান অসামান্য। তার হাত ধরেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা।
ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনে তার অবদান অনেক, ভারতের রকেট ও মিসাইল প্রযুক্তিতে তার অবদান সর্বাগ্রে। অগ্নি বৃত্তের মত পারমাণবিক অস্ত্রবাহী মিসাইল প্রযুক্তি পূর্ণতা পেয়েছে তাঁর হাত ধরেই ।এ জন্য তাঁকে "মিসাইল ম্যান অফ ইন্ডিয়া" বলে আখ্যায়িত করা হয়।ভারত রত্ন এবং মিসাইলম্যান খ্যাত আবদুল কালাম ছিলেন ভারতের ১১ তম রাষ্ট্রপতি। তৎকালীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার কালামের নাম প্রস্তাব করলে কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি সহ অনেক দলই একযোগে তা মেনে নিয়েছিল ।এরপর তিনি ২০০২ থেকে ২০০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৩১ সালের ১৫ অক্টোবর তামিলনাড়ুর একটি ছোট্ট শহরে জন্ম কালামের। শহর ছোট হলেও বড় স্বপ্ন নিয়ে পৃথিবীর পথে যাত্রা শুরু করেছিলেন তিনি ।রামেশ্বরমের কালামের পিতা আবুল ফকির জয়নাল আবেদীন ডিঙ্গি নৌকা তৈরি করতেন। তামিল মুসলিম পরিবারের ছোটবেলা থেকেই চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বড় হয়ে ওঠেন কালাম। পরিবারের দারিদ্রতা পড়াশুনার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, পড়াশোনার ব্যয় সংকুলান করতে কালাম অনেক ছোটখাটো কাজ করেছেন জীবনে। পরিবারকে সহায়তা করার জন্য খবরের কাগজও বিক্রি করেছিলেন তিনি।
কালাম নির্দিষ্ট দিনের মধ্যেই তার প্রকল্প সম্পন্ন করেন। ৮ টি পদের জন্য পরীক্ষার নবম স্থান স্থান লাভ করায় ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যুদ্ধবিমানের চালক হিসেবে তার স্বপ্ন অল্পের জন্য হাতছাড়া হয়।
১৯৬০ সালে বিজ্ঞানী হিসেবে কালাম "ডিআরডিও ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন" এর সঙ্গে যুক্ত হন ।ক্যারিয়ারে একেবারে প্রথম দিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য একটি ছোট হেলিকপ্টার ডিজাইন করেন কালাম।
১৯৬৫ সালে তিনি ডিআরডিওতে একটি রকেট প্রজেক্টে কাজ শুরু করেন ।১৯৬৯ সালে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় স্যাটেলাইট প্রজেক্ট ডিরেক্টর পদে আসীন হন। তার নেতৃত্বে ১৯৮০সালে ভারত প্রথম স্যাটেলাইট "রোহিণী " মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেন।প্যালিস্টিক ক্ষেপনাস্ত্র সংক্ৰান্ত তার গবেষণার কারণে তাকে ভারতের "মিসাইল ম্যান" হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে সংগঠিত ভারতের প্রধান দুই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।
২০০২ ভারতীয় জনতা পার্টি ও ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কালাম ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন এবং পাঁচ বছর এই পদের দায়িত্ব পালন করেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকারে এপিজে আব্দুল কালামকে ১৯৮১ সালে "পদ্মভূষণ", ১৯৯০ সালে "পদ্মবিভূষণ" ও ১৯৯৭ সালে "ভারতরত্ন" উপাধিতে ভূষিত করেন। এই তিন জাতীয় উপাধি ছাড়াও জাতীয় স্বার্থ ও মানবকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি আরো অনেক দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পদক সম্মানে ভূষিত হন। রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনকালে কালাম যেমন প্রশংসিত হয়েছেন তেমনি সমালোচিতও হয়েছেন। বিশেষ করে ২০জনের প্রাণভিক্ষার আবেদন এর ব্যাপারে তার নির্বিকার ভূমিকা অনেকে ভালোভাবে নেন নি।
রাষ্ট্রপতি ও বিজ্ঞানী কালামের বাইরে তিনি একজন অত্যন্ত সংবেদনশীল লেখকও ছিলেন। তিনি বেশকিছু প্রণোদনামূলক ও প্রভাবশালী বই লিখেছেন। এর মধ্যে "ইন্ডিয়া ২০২০" সর্বাধিক পঠিত ও প্রশংসিত। ২০২০ সালের মধ্যে সুপারপাওয়ার হতে হলে ভারতকে কি ধরনের পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে তিনি সে ব্যাপারে একটি রূপরেখা দিয়েছেন।
তাঁর অন্যান্য বহুলপঠিত বই এর মধ্যে রয়েছে "ইগনাইটেড মাইন্ডস", "মিশন ইন্ডিয়া",ইন্সপায়ারিং থটস,"দ্যা লুমিনাস স্পার্কস",ও "উইংস অফ ফায়ার"। ২০১১ সালে তিনি তরুণদের নিয়ে "হোয়াট ক্যান আই গিভ মুভমেন্ট "শীৰ্ষক দূর্নীতি বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন।
কালামের লেখা ২৯ টি বইয়ের মধ্যে উইংস অফ ফায়ারে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তার জীবনের ঘটনাক্রম উঠে এসেছে। বইটির ১০ লাখের বেশি কপি বিক্রি হয়েছে।ওই সাফল্যের অনুপ্রেরণায় তিনি লেখেন" টার্নিং পয়েন্টস " নামে আরেকটি বই, যাতে নিজের সফলতার পথে সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তিনি তুলে আনেন।
তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে লেকচার দিয়ে বেড়াতেন । তরুণ শিক্ষার্থীদের অনেক ভালোবাসতেন তিনি।
ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গ দিতেন তিনি এবং সেইসাথে কিভাবে পথ চলতে হয়, স্বপ্ন দেখতে হয়, আর স্বপ্ন পূরণ করতে হয় তা শিখিয়ে যেতেন তাদের ।প্রায় ৮০ লাখেরও বেশি তরুণদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেছেন বলে জানিয়েছিলেন এক অনুষ্ঠানে ।
এই মহান মানুষটি ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২৭শে জুলাই মেঘালয় শিলং শহরে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানে বসবাসযোগ্য পৃথিবী বিষয়ে বক্তব্য রাখার সময় ভারতীয় সময় সন্ধ্যা ৬:৩০ নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হন ।
তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে সন্ধ্যা ৭:৪৫ নাগাদ তার মৃত্যু হয় ।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। কালামের মৃত্যুর খবর শুনে শিলংয়ের অনেক মানুষ বেথানি হাসপাতালের সামনে ভিড় জমান। তাদের মুখে ছিল "কালাম অমর রাহে" স্লোগান।
শৈশবে পারস্যের কবি জালাল উদ্দিন রুমির একটি কবিতায় কালামের হৃদয়ে স্বপ্নের বীজ বুনে দিয়েছিল, যে কবিতাটি ঢাকায় এসে তরুণদের আবৃত্তি করে শোনান তিনি। "আমি সম্ভাবনা নিয়ে জন্মেছি, আমি জন্মেছি মঙ্গল আর বিশ্বাস নিয়ে, আমি এসেছি স্বপ্ন নিয়ে, মহৎ লক্ষ্য নিয়ে আমার জন্ম, হামাগুড়ির জীবন আমার জন্য নয়, কারণ আমি ডানা নিয়ে এসেছি, আমি উড়বো উড়বো, আমি উড়বোই ।"
Table of content:
ApJ abdul kalam biography
abdul kalam life story
life history of apj abdul kalam
apj abdul kalam short biography
apj abdul kalam jivan parichay
dr apj abdul kalam birth place
abdul kalam date of birth and death
About apj abdul kalam biography book
motivational stories
inspirational story
2 Comments
Thanks for sharing
ReplyDeleteNice👍
ReplyDeletePlease don't enter any spam links in the comment box.