Inspirational story/short story
story online/short story in bangla
আমি যেটাই শুরু করতে যাইনা কেনো সেখানে একটা বাঁধা অবশ্যই আসবে।কোনো কিছুই আমার সাথে ভালো হয়না।
নিজেকে কি এরকমই দূর্ভাগা মনে করেন? নাকি আপনার মনেও মাঝে মাঝে এরকম হতাশাজনক চিন্তা চলে আসে? আর তখন আপনার মনোবল একদম ভেঙে যায়,আপনি যদি নিরাশ হয়ে যান তাহলে এই কাহিনীটি একমাত্র আপনার জন্য। পরিস্থিতির যেমনই হোক না কেন হতাশা নিরাশা আজকের পর থেকে এগুলো আপনাকে আর ছুঁতে পারবেনা।
অনেক বছর আগে একজন চাষী একটি গ্রামে থাকতো,তার কাছে বেশ কিছুটা জমিজমা ছিল ।সেই জমিতে চাষাবাদ করে খুব শান্তিতে সে তার জীবন কাটাচ্ছিল। আর তার সন্তান বলতে একটি মাত্র ছেলে ছিল। বাবাকে সাহায্য করার জন্য ছেলেও মাঝে মাঝে জমিতে চাষের কাজে লেগে পড়তো।চাষাবাদের কাজ ছাড়াও গরু ছাগল মুরগি আর কিছু ঘোড়া পুষতো । একদিন সেই ঘোড়া গুলোর মধ্যে একটি ঘোড়া মাঠে ঘাস খেতে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা হারিয়ে কোথাও চলে যায়। তখন ছেলেটির মনে খুব আঘাত লাগে, তার অসাবধানতার কারণেই ঘোড়াটি হারিয়ে গিয়েছে ।তাই তার বাবার কাছে গিয়ে ছেলেটি ক্ষমা চায় ।লোকটি তখন তার ছেলেকে বোঝায় যে ঠিক আছে তুমি মন খারাপ করো না যা হয়ে গেছে তা ভুলে যাও তবে আর কখনো এরকম যাবে না হয় সেটা খেয়াল রেখো।
কিন্তু তার পরিচিত গ্রামের লোকেরা এই ঘটনাটি শুনে বলতে লাগলো "ইশ কত ভালো একটা ঘোড়া এভাবে হারিয়ে ফেললেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় শুনে খুব খারাপ লাগছে" গ্রামের লোকেরা এরকম নানা কথা বলতে থাকে থাকে তাকে। কিন্তু লোকটি তাদের কথাতে খুব একটা গুরুত্ব না দিয়ে ঠিক আছে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে এই বলে সেখান থেকে চলে যায়।
তার কয়েকদিন পর সেই হারিয়ে যাওয়া ঘোড়াটি জঙ্গল থেকে আরও পাঁচটি ঘোড়াকে সাথে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে ।এই দেখে তার ছেলে খুশিতে লাফিয়ে ওঠে। একটা হারিয়ে গিয়েছিলো আর এখন ৬টা ফিরে পেয়েছে, আনন্দে মেতে ওঠে ।
এই ঘটনাটি গ্রামবাসীরা জানার পর তারা বলে যে তুমি ভীষণ ভাগ্যবান এতগুলো নতুন গোড়া এমনি এমনি পেয়ে গেলে । এবারও সেই লোকটি তাদের কথা শুনে তাই হবে হয়তো বলে সেখান থেকে চলে যায় ।
আরো কয়েকদিন পর সেই নতুন গোড়া গুলির মধ্যে একটি ঘোড়াকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ঘোড়ার পিঠ থেকে পড়ে তার ছেলের পা ভেঙে যায় ।এবার গ্রামের কিছু লোক তাদেরকে বলে নতুন ঘোড়াগুলো ততটা লক্ষণীয় নয় তাই তোমার ছেলেটার পা এভাবে ভেঙে গিয়েছে ।সব শুনে লোকটি সেই আগের মতই হবে হয়তো এই বলে সেখান থেকে চলে যায় ।
আরো কিছুদিন পর ওই গ্রামে কিছু নতুন লোক আসে, দেশের সৈন্য দলে যোগ দেওয়ার জন্য তারা গ্রামের সকল জোয়ান ছেলেদেরকে তাদের সাথে নিয়ে যায়। কিন্তু এই লোকটির ছেলের পা ভেঙে থাকার কারণেই তাকে নিয়ে এখন কোন কাজ করানো যাবে না তাই তারা তাকে আর নিয়ে যায় না। গ্রামের লোকেরা আবারও বলে তোমার খুব ভাগ্য ভালো ,আমাদের ছেলেগুলোকে পরিবার ছেড়ে কত দূরে চলে যেতে হল কিন্তু তোমার ছেলের পা ভাঙ্গা থাকার কারণে তাকে তারা নিয়ে যায়নি ।তোমার ছেলে তোমার কাছেই আছে তোমার কপাল খুব ভালো। এবারও সেই লোকটি প্রতিবারের মতো তাই হবে হয়তো এই বলে চুপ হয়ে যায় ।
"লাইফ ইজ টেন পার্সেন্ট হোয়াট হেপেন্স টু মি এন্ড নাইন্টি পারসেন্ট হাউ আই রিয়্যাক্ট টু ইট " অৰ্থাৎ আমাদের সাথে যে খারাপ ঘটনাগুলো ঘটে সেগুলো আমাদের জীবনের কেবল টেন পার্সেন্ট প্রভাব ফেলে আর বাকি নাইনটি পার্সেন্ট প্রভাব পড়ে সেই ঘটনাটি ঘটার পর সেটাকে নিয়ে আমরা যেমনটা রিয়াক্ট করি তার ওপরে।
একটি ছোট্ট উদাহরণ দিই।একটি খুব জরুরী কাজে ব্যস্ত হয়ে তুমি বাইরে বের হলে ,কিন্তু বেরিয়ে দেখলে যে বৃষ্টি এসে গিয়েছে কিংবা গাড়ি পাংচার হয়ে গিয়েছে কোন না কোন কারনে একটা সমস্যা তোমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে আমরা বেশির ভাগই আফসোস করতে থাকি নিজেই নিজের কপালকে দোষ দিতে থাকি কিন্তু অপর দিকে একটু চেষ্টা করলেই হয়তো আরো একটি পথ খুলে যেতো । কিন্তু আফসোস করা আর ভাগ্যের দোষ দিতে গিয়ে সেই সুযোগটিকে আমরা দেখতেই পাই না।
যেকোনো বিফলতা ,যেকোনো সমস্যা, যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সেটার মধ্যে নিজেকে হারিয়ে ফেলবেন না । সেটা থেকে বেরিয়ে এসে তার পরের কথা ভাবুন। সেটা ঘটার পিছনে নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে। এটাই বিশ্বাস রাখেন একটি তীরকে যতোই আপনি ধনুক দিয়ে পিছনে টানবেন সেটা ছাড়ার পর তীরটি তার লক্ষ্যের দিকে ততো বেশি গতিতে ছুটবে ।
বিভিন্ন রকম সমস্যা আজকে তোমাকে ঠিক যতটা পিছনে ঠেলছে এই পিছিয়ে যাওয়ার কারণটি একসময় তোমাকে এত গতি দেবে যে সমস্ত বাঁধাপেরিয়ে তুমি তোমার লক্ষ্যে ঠিক পৌঁছে যাবে।
1 Comments
Nice post.. Keep it up
ReplyDeletePlease don't enter any spam links in the comment box.