Life changing motivational story(Bangla)

 

motivational story(Bangla)

Life changing motivational story(Bangla)/Sofolotar golpo bangla

একজন মানুষের সফলতার পিছনে কি থাকে!আপনার কি মনে হয়?

শিক্ষা,অভিজ্ঞতা,টাকা নাকি এই তিনটি জিনিসই?আর কোনো কারণে এই তিনটির একটিও যদি না থাকে তাহলে কি জীবনে সফল হওয়া যাবে?আজ একটি গল্প বলবো যার মাধ্যমে এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। 


জাপানের একটি ছোট গ্রামে একটি ছোট্ট ছেলে থাকতো এবং তার পরিবার ছিল খুবই গরীব। একটিই  ঘরের মধ্যে পরিবারের সবাই থাকতো। কম উপার্জনের কারণে পরিবারে সব সময় অভাব লেগে থাকত। সেই কারণেই নয় বছর বয়সেই এই ছোট ছেলেটি পড়াশোনা ছেড়ে পরিবারকে কিছুটা সাহায্য করার জন্য একটি দোকানে কাজে ঢুকে।


ছেলেটি খুবই পরিশ্রমী ছিল।প্রতিদিন সূর্য উঠার আগেই ঘুম থেকে উঠা তার অভ্যাস ছিল।সকালে সবার আগে দোকানে গিয়ে ভিতর বাহির সব পরিষ্কার করে দোকান মালিকের বাড়িতে যদি ছোটখাটো কোন কাজ থাকে সেগুলো সে খুবই সুন্দর ভাবে করে দিত।এতো ছোট বয়সে এতগুলো কাজ এত সুন্দরভাবে করে দেখানোর কারণে দোকানের মালিক তার উপরে অনেক ভরসা করতো এবংতাকে খুবই ভালোবাসতো।


কিছু বছর পর সেখানকার এক ইলেকট্রিক কোম্পানিতে ছেলেটি একটি কাজ পায় এবং সেই কোম্পানিতে কাজ করতে করতে ইলেকট্রিক বাল্বে ও সকেট কিভাবে তৈরি করতে হয় সেটা শিখে নেয় এবং সকেট তৈরি করার প্রতি তার উৎসাহ ও আগ্রহ আস্তে আস্তে আরো বাড়তে থাকে।


প্রতিদিন  কাজের শেষে যে সময় বাঁচতো সে সময় দিয়ে  সে নতুন নতুন সকেট তৈরি করার চেষ্টা করে যেত। নতুন কোনো কিছু তৈরি করবো এই  আত্মবিশ্বাসের সাথে সে সর্বদা প্রচেষ্টা করে যেত আর একদিন সে সত্যি সত্যি এক ধরনের নতুন সকেট  তৈরি করে ফেলে। একটি নতুন জিনিস আবিষ্কার করেছে তাই সে ভীষণ খুশির সাথে সেই জিনিসটি কোম্পানির ম্যানেজার কে দেখায়।কিন্তু ম্যানেজার তার তৈরি জিনিস দেখে মোটেও উৎসাহিত হন না।


এই নতুন ধরনের সকেট ঠিকভাবে কাজ করবে না, বাজারে এর  কোন চাহিদা হবে না এই সমস্ত বলে তাকে ফিরিয়ে দেয়। ম্যানেজার তার আইডিয়ার কোন মূল্য দেয়নি বলে সে কিন্তু তার মনোবল ভাঙ্গে না। তার  আইডিয়া অবশ্যই সফল হবে এই বিশ্বাস সে মমনের মধ্যে ধরে রাখে ।


সে নিজেই যদি এরকম একটা কোম্পানি খুলে  তাহলে কেমন হয়-এরকম কথাও সে ভাবে কিন্তু একটি কোম্পানি শুরু করার মত টাকা ও অভিজ্ঞতা তার কাছে তখন ছিলোনা। আর  নয় বছর বয়সে পড়াশোনাও বন্ধ করে দেওয়ার কারণে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও তার নেই।তবে ছোটবেলা থেকে বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখা ও ভীষণ পরিশ্রম করার কারণে তার ভিতরে আত্মবিশ্বাসের কোনো কমতি থাকে না।


আর ২২ বছর বয়সে সে তার জীবনের একটি সাহসী সিদ্ধান্ত নেয়। সে যে কাজটি করছিল সেটা ছেড়ে দিয়ে একটি ছোট ব্যবসা শুরু করে  এবং কাজটি সে তার বাড়ি থেকেই শুরু করে।বাড়ির ছোট্ট একটি জায়গা বেছে নিয়ে সেখানেই সে  তার ঐ  নতুন ধরনের তৈরির সকেট তৈরির কাজ শুরু করে। ধীরে ধীরে রকেট তৈরি হয়ে যাওয়ার পর দোকানে দোকানে গিয়ে সেগুলোকে সে বিক্রি করার খুব চেষ্টা করে।


কিন্তু তার দুর্ভাগ্য!তার সেই সকেট কোন দোকানদারই কিনেন না।কেউই কোনো অর্ডার দেয় না। এভাবেই আরো কিছু মাস কেটে যায় আর তখনও পর্যন্ত সে একটি সকেটও বিক্রি করতে পারেনি।


অন্য কোন কাজও নেই, এদিকে পরিবার চালানোর জন্য টাকারও খুব প্রয়োজন।তাই পরিচিতদের থেকে  কিছু টাকা ধার নিয়ে এবং ঘরের কিছু জিনিসপত্র বিক্রি করে এভাবেই সে আরো কিছু মাস চলতে থাকে।মাঝে মাঝে হতাশ হয়ে যেত সে। এই ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে আবার পুরনো কাজে ফিরে যাই-এমন চিন্তাও তার মাথায় অনেক বার  আসে। 


কিন্তু তার ভিতরের উৎসাহ "যেভাবেই হোক জিততে হবে" এই জেদ, তার   আবিষ্কার একদিন অবশ্যই সফল হবে এই আত্মবিশ্বাস, "আরো কিছুদিন চেষ্টা করবো," আরও কিছুটা সময় ধৈর্য ধরার শক্তি দেয় তাকে।আর সফলতা তো  অনেকগুলো বিফলতার পরেই আসে তাই না!তার কাছে যা টাকা ছিল সব শেষ হয়ে যায়।এখন কাজ করলে তবেই পরিবার চলবে- এরকম পরিস্থিতিতে চলে আসে সে আর তখনই সেই ঘটনাটি ঘটে।


কোন এক জায়গায় ১০০০ সকেটর প্রথম অর্ডার আসে তার কাছে আর তখন সে সেটা বিশ্বাস করতে পারছিল না। আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে ছেলেটি। সেই প্রথম ১০০০ সকেটর অর্ডার পাওয়ার দিনটি এখন প্রায় ১০০ বছরেরও বেশি হয়ে গিয়েছে ।আর সেই ছোট্ট ছেলেটির কোম্পানিতে এখন প্রায় ২ লক্ষেরও অধিক মানুষ কাজ করে আর তার বাৎসরিক ইনকাম এখন ৭০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশী।


তার তৈরি প্রোডাক্ট এখন সারা বিশ্বে বিক্রি হয়,নিজের একটি আলাদা সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে সে। কিন্তু যার কাছে কোন শিক্ষাগত যোগ্যতা ছিল না, যার কাছে ব্যবসা করার জন্য টাকা ছিল না, যার কাছে ব্যবসা করার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না সে কিভাবে এত বড় একটি কাজ করতে পারে!


আপনি পারবেন না,আপনার তৈরি জিনিস কেউ কিনবে না,তুমি বিফল হবে প্রত্যেকের এই সমস্ত কথা শোনার পরও সে কিভাবে বিজয়ী হয়? মাত্র একটি জিনিস সেটা শুধুমাত্র তার আত্নবিশ্বাস। সে করতে পারবে এটি সে বিশ্বাস রেখেছিলো আর সেই বিশ্বাসের সাথে সে সর্বদা প্রচেষ্টা করে গিয়েছিল। আর এই আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তিটির নাম হলো Konosuke Matsushita।


বিশ্ব বিখ্যাত এলেক্ট্রনিকস কোম্পানি প্যানাসনিক(Panasonic) এর জন্মদাতা তিনি ।একটি  ছোট  ঘর থেকে শুরু করে আজ সারা বিশ্বের ঘরে ঘরে তার প্রোডাক্ট ব্যবহার হয়।


 সফলতা শুধুমাত্র কে কত বেশি পড়াশোনা করেছে তার ওপরে নয়,কার কাছে কত টাকা আছে তার উপরেও নয়, তুমি নিজের ও নিজের কাজের  উপরে কতটা বিশ্বাস রাখো তার উপর নির্ভর করে। যখন কোন কাজে বিফলতা আসে,যখন চলার পথে বিভিন্ন বাধা আসে তখন" আমি পারবো" এই আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে আবার পথ চলা শুরু করুন ।


আপনি আগামীদিন সফল হওয়ার জন্য আজ অনেক বড় একটি ইচ্ছা শক্তির প্রয়োজন।"আমার বাবা-মা আমার উপরে অনেক ভরসা করে আছে, আমাকে ভালোভাবে পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে হবে, আমার মালিক আমাকে অনেক বিশ্বাস করে ভালোভাবে কাজ করে তার কাছের নাম করতে হবে" এগুলো এক একটি সাধারন ইচ্ছা  কিন্তু এর উপরেও "আমার যোগ্যতা আছে আমি, আমি এটি অবশ্যই করতে পারব, যতই বাধা আসুক সেগুলোকে পার করে আমি অবশ্যই জিততে পারবো" এই আত্মবিশ্বাসটাকে প্রথমে নিজের নিজের ভিতর আনতে হবে ।

প্রথমে নিজেই নিজের কাজের উপরে ভরসা রাখতে হবে তবেই দুনিয়া তোমার কাজের উপরে ভরসা করবে।

এটাই ছিল অশিক্ষিত আর গরীব ছেলের বিশ্বজয় করার কাহিনী ।সর্বদা প্রচেষ্টা এবং পরিশ্রম "যাই  হয়ে যাক ,যতই বাধা আসুক আমি হাল ছাড়বো না" এগুলোই আপনাকে একদিন একটি সফল মানুষে রূপান্তর করে দিবে।





Post a Comment

0 Comments