ব্যবসা শুরুর আগে Warren Buffett এর কিছু কথা জানুন


Warren Buffett


ব্যবসা শুরুর আগে Warren Buffett এর কিছু কথা জানুন|| Get to know Some words from Warren Buffett before starting a business

Sofolotar golpo Bangla

ওয়ারেন বাফেট(Warren Buffett) এর কিছু কথা আপনাদেরকে বলবো। বিশ্বের বিখ্যাত ধনী ব্যক্তিওয়ারেন বাফেট ১৯৩০ সালে ৩০ আগস্ট আমেরিকার ওহামা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হাওয়ার্ড বাফেট প্রথম জীবনে একজন স্টক মার্কেটের ব্রোকার ছিলেন এবং পরবর্তীতে তিনি পলিটিক্সে যোগ দেনএবং তার মা একজন গৃহিনী ছিলেন।


এই তথ্যগুলো ওয়ারেন বাফেট এর লেখা বই স্নোবল থেকে নেয়া হয়েছে।ছোটবেলা থেকে বাফেটের ঝোঁক ছিল ব্যবসার প্রতি।যেহেতু তার বাবা একজন স্টক ব্রোকার ছিলেন সে ক্ষেত্রে তিনি স্টক মার্কেট সম্পর্কে গভীরভাবে জানার সুযোগ পেয়েছিলেন ছোটবেলা থেকেই।

বাফেট তার প্রথম জীবনের ইনকাম করেছিলেন তার দাদার দোকান থেকে নেয়া চুইংগাম বিক্রি করে।এগুলো তিনি তার প্রতিবেশীদের কাছে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করতেন,তার জীবনের প্রথম ইনকাম হয়েছিল সেখান থেকেই| বাফেট এর পরবর্তী ব্যবসা ছিল কোলড্রিংস নিয়ে। তিনি বিভিন্ন রকমের কোলড্রিংস বিক্রি করার সময় সেগুলোর কর জমিয়ে  রাখতেন। হিসাব করতেন যে কোন কোলড্রিংসটি  সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে।


তখন তিনি দেখলেন সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে কোকাকোলা। পরবর্তীতে তিনি তার দোকান থেকে ২৫ সেন্ট দিয়ে ১০টি কোকাকোলা  কিনে তা ৩০ সেন্ট দিয়ে বিক্রি করেছিলেন। এভাবে করেই তিনি ছোটবেলা থেকেই ছোটখাটো রোজগার করা শুরু করেন।কিন্তু একটা সময় আসে তখন তিনি ভাবলেন তাকে অনেক বেশি টাকা ইনকাম করতে হবে।পাশাপাশি তিনি এটিও চাইতেন তার কোন বস থাকবে না,তিনি নিজেই তার বস হবে।


তিনি সবসময় এটিই  ভাবটেন  কীভাবে করে তার এই বিজনেস  সেটআপটি করা যায়।হঠাৎ তিনি এমন একটি উপায় পেয়েও  গেলেন।একদিন তিনি লাইব্রেরীতে একটি বই পেলেন-" হাজার ডলার কামানোর হাজারো  উপায়।" তিনি খুব আগ্রহ সহকারে বইটি পড়া শুরু করলেন।পড়তে পড়তে তিনি দেখলেন সেখানে হাজার রকমের ব্যবসার আইডিয়া রয়েছে।


কিন্তু সেগুলো কোনটাই তার পছন্দ হচ্ছিল না। হঠাৎ আমার একটি আইডিয়া পেয়ে গেলেন যেটি  তার মনে ধরে গেল। আইডিয়াটি ছিলো   ওজন পরিমাপ যন্ত্রের মাধ্যমে মানুষের ওজন পরিমাপ করে টাকা নেয়া। তখন তিনি ভাবলেন যে প্রথমে  একটি মেশিন দিয়ে কাজশুরু করবো পরবর্তীতে যখন শেখান থেকে লাভ  আসা শুরু হবে তখন আমি  ১০টি মেশিন কিনবো। এভাবে একটা সময় গিয়ে আমার ২০টি  মেশিন হয়ে যাবে।


এরকম চিন্তা করার পেছনে সেই বইয়ের আরো একটি আইডিয়া তার পছন্দ হয়েছিল সেটা হলো "Compounding।" অর্থাৎ তিনি যদি ১০০০ ডলার ইনকাম করে সেটির ১০% করে বাড়াতে থাকেন তাহলে পাঁচ বছরের মধ্যে সেটা  ১৬০০ ডলারে পরিণত হবে এবং ১০বছরের মধ্যে ২৬০০ ডলার  এবং ২৫ বছরের মধ্যে ১০৮০০ ডলারে পরিণত হবে। 


এই হিসাবটি করার পর তিনি আরও ভাবতে লাগলেন তিনি কীভাবে টাকা সেভ করবেন। কারণ যত বেশি টাকা তিনি সেভ করবেন Compound  Effect'য়ের  মাধ্যমে তার বিজনেস নির্দিষ্ট সময় পর ঠিক ততো বেশি পরিমাণ গ্রও (grow)করতে শুরু করবে। আরে সকল কিছু ভাবার পর তিনি তার বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবারের সদস্যদের বলে দিলেন ৩৫ বছরের মধ্যে তিনি একজন বিলিয়নিয়ার হতে চলেছেন।


এরপর মাত্র ১১ বছর বয়সে তিনি তার প্রথম শেয়ারটি কিনে ফেলেন।এতদিন ব্যবসা করার পর তিনি মোটামুটি ১২০ ডলারের মতো জমিয়েছিলেন।সে টাকাটা তিনি তার বোন টোরিস'য়ের সাথে মিলে ৩৩% হিসেবে করে মোট ৩৮ ডলারের তিনটি শেয়ার কিনেছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পর সে শেয়ারের দাম কমে গিয়ে ২৭ ডলারে পোঁছায়।আর এই কারণে প্রতিটি দিনই স্কুলে যাওয়ার সময় তার বোন তাকে বলতো তোর কারণে আজ আমার লোকসান হয়ে গেলো।বিষয়টি বাফেটের অনেক খারাপ লাগতো।


কিন্তু হঠাৎ করেই সেই শেয়ারের দাম কিছুদিন পরেই ৪০ডলার হয়ে গেলো এবং সাথে সাথেই তিনি সে শেয়ার তিনটিকে বিক্রি করে ৬ ডলার প্রফিট করে ফেলেন। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার এইযে সেই শেয়ারটির দাম পরবর্তীতে ২০২ ডলার পর্যন্ত উঠেছিল।এখান থেকে মি: বাফেট তিনটি বিষয় শিখেছিলেন।এক:না বুঝেশুনে কখনো কোনো শেয়ার কিনতে নেই । দুই:ছোটোখাটো লোভে পড়ে কখনো শেয়ার বিক্রি করতে নেই।তিন:অন্যের টাকা পয়সা নিয়ে কখনো কোনো কাজে ইনভেস্ট করতে নেই।


 এরপর তিনি নিউজপেপার সাপ্লাই থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকম কাজ করেছেন।১৯৪৭ সালে হাইস্কুল জীবন শেষ করার পর তিনি চাইছিলেনই না আর কলেজে ভর্তি হবেন।কারণ এইদিকে তার ব্যবসা অনেক ভালো চলছিলো।কিন্তু তার বাবা তাকে বলেছিলেন"Walton Business" স্কুলে ভর্তি হতে। সেখানে তিনি দুই বছর কাটান এবং হরহামেশাই তিনি তার বাবাকে এই অভিযোগ করতেন যে তার শিক্ষকের চেয়েও তার ব্যবসায়ের ব্যাপারে আইডিয়া বেশী রয়েছে।এরপর তিনি ওহামাতে ফিরে আসেন এবং "ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা"(University of Nebraska)তে ভর্তি হয়ে যান।সেখানে ৩ বছরের মধ্যে নিজের কাজকর্ম শেষ করার মধ্যে দিয়ে তার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেন।



এরপর তিনি মাস্টার্স করার জন্য হার্বার্ড বিজনেস স্কুলে এপলাই করেন।কিন্তু তার এপ্লিকেশনটি রিজেক্ট করা হয়েছিল আর আজ পর্যন্ত হার্বার্ড উনিভার্সিটির সবচেয়ে বড় মিস্টেক বলে এটিকেই গণ্য করা হয়।পরবর্তীতে তিনি তার স্থানীয় লাইব্রেরির বইগুলোকে পড়তে শুরু করেন এবং সেই বইগুলোর মধ্যে একটি বই তার মনোযোগকে অনেক বেশী আকর্ষণ করে সেটি হলো দ্য ইন্টেলিজেন্ট ইনভেস্টর(The intelligent investor)যার লেখক ছিলেন বেনজামিন গ্রাহাম।


খোঁজখবর নিয়র তিনি জানতে পারলেন যে বেনজামিন গ্রাহাম "কলম্বিয়া উনিভার্সিটিতে" পড়াচ্ছেন।তখন তিনি তাড়াহুড়া করে সেখানেই আবেদন করে ফেললেন আর এপ্লিকেশনটি গ্র্যান্টেড হলে গেলে তিনি সে জায়গায় এডমিশন নিয়ে পড়তে শুরু করলেন।আর সেখান থেকেই তিনি "ভ্যালুই নভেস্টিংয়ের"বিষয়টি আয়ত্ত করেন।


"ভ্যালু ইনভেস্টিং" এই আইডিয়াটি এমন ছিল যদি ১০০ ডলারের কোনো কোম্পানি শেয়ারের দামে ৫০ ডলারে বিক্রি হয় তাহলে সে শেয়ারটি কিনে নিয়ে তিনি অপেক্ষা করতেন যে কবে সেটার অরজিনাল ভ্যালু বাজারে উঠবে।আর যখনই সেটির অরজিনাল ভ্যালু ১০০ ডলার হতো তখন তিনি সেটাকে বিক্রি করে ডাবল প্রফিট করতেন।


কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করার পর তিনি বেনজামিনের কোম্পানিতে চাকরির জন্য এপলাই করেন।কিন্তু সেটা রিজেক্ট হয় কারণ বেনজামিন তখন শুধুমাত্র জিউসদের নিয়ে কাজ করতেন।সেখান থেকে রিজেক্ট হওয়ার পর তিনি ওহামাতে আবার চলে আসেন।এসে স্টক মার্কেটে টিচিংয়ের কাজে লেগে পড়েন।


কিন্তু কয়েক বছর পর হঠাৎ করেই বেনজামিনের কোম্পানি থেকে তার ডাক আসে।এরপর দুই থেকে তিন বছর তিনি তার গুরু বেনজামিনের সাথে কাজ করেন ।বেনজামিনের বয়স হয়ে গেলে যখন তিনি Retired করেন তখন বাফেটের সাথে তার পার্টনারশিপটিও শেষ হয়ে যায়।এরপর ওয়ারেন বাফেট নিজে পার্টনারশিপের জন্য পার্টনার খুঁজতে থাকেন।তিনি তার ফ্যামিলি মেম্বার এবং আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে কিছু বিজনেস পার্টনার পেয়েও যান।


মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে তিনি একলাখ পাঁচ হাজার একশো ডলার নিয়ে তার কোম্পানি শুরু করেন।তিনি তার পার্টনারদের কাছ থেকে কখনো ম্যানেজমেন্ট ফী নিতেন না ।কিন্তু যদি ৬% এর উপরে লাভ হতো তাহলে তিনি সেখান থেকে ২৫% নিজে রেখে দিতেন আবার লস হলে সেটি সবার সাথে শেয়ারও করতেন।



তার এই ব্যবসা কয়েক বছরের মধ্যেই সাত বিলিয়ন ডলারে পরিণত হয় যার মধ্যে বাফেটের ছিল এক বিলিয়ন ডলার।যদিও তিনি বলেছিলেন ৩৫ বছরের মধ্যে তিনি বিলিনিয়ার হবেন কিন্তু সেটা তিনি তার তিন বছর আগেই করে দেখিয়েছিলেন।


 ১৯৬৮সালটি মিঃ বাফেটের জন্য স্বর্ণযুগ ছিল।ঐ বছর বাফেট তার মোট ইনভেস্টের ৫৮.৮%রিটার্ন পেয়েছিলেন যার মধ্যে তাকে পে করতে হয়েছিল শুধুমাত্র ৭%।অর্থাৎ আপনি যদি  তার সাথে সেই সময় মানে ১৯৫৭ সালে এক লক্ষ ডলার  ইনভেস্ট করতেন তাহলে সেটা ১৯৬৯ সালে যেয়ে দাঁড়াতো ১.৭মিলিয়ন ডলার।


সেসময় বাফেট ছিলেন একজন অন্যতম নাম করা ইনভেস্টর।কিন্তু ১৯৬৯ সালে হঠাৎ করেই মার্কেটে শেয়ার বাজারের দাম প্রচন্ড পরিমান বেড়ে যায়।সে কারণে বাফেট তার শেয়ারে পার্টনারশিপও ক্লোজ করে দিলেন।মিঃ বাফেট আজ পর্যন্ত তার ব্যবসায় যে সকল টেকনিক অবলম্বন করেছেন তার সবগুলোই বেনজামিন গ্রাহামের কাছ থেকে শিখেছিলেন।



অর্থাৎ একজন ইনভেস্টরকে একমাত্র সেসকল কোম্পানিতে ইনভেস্ট করা উচিত যেগুলোতে মানুষের নজর একেবারেই নেই।হিসেবে অনুযায়ী যদি কোন কোম্পানির এসেট ১০ বিলিয়ন ডলার হয় এবং সে কোম্পানিটির ঋণ তিন বিলিয়ন ডলারও হয় তারপরেও সে কোম্পানিটির ভ্যালুটি গিয়ে দাঁড়ায় ৭ বিলিয়ন ডলার।কিন্তু যদি সেই কোম্পানির শেয়ার তিন বিলিয়ন ডলারের উপরে বিক্রি হতে থাকে তাহলে বুদ্ধিমানের মতো কাজ হবে সে শেয়ারটি কিনে নিয়ে চুপ করে বসে থাকা।



তারপর যখন সে কোম্পানিটির শেয়ার অরজিনাল ভ্যালু মানে ৭ বিলিয়নে পোঁছাবে তখন সেটি বিক্রি করে দিতে হবে।এই ইনভেস্টিং সিস্টেমকে "নেট ইনভেস্টিং বা সিগার বাট ইনভেস্টিং"ও বলা হয়ে থাকে।পরবর্তীতে তার সিস্টেমে আমূল পরিবর্তন আনে যখন তিনি তার পার্টনার হিসেবে চার্লস ডি'কে সাথে পান।


প্রথম দিকে বাফেট কিছু সস্তা কোম্পানিকে সস্তা শেয়ারে কিনে সেগুলোকে উচ্চ দামে বিক্রি করতেন।কিন্তু চার্লেসয়ের সাথে কাজ করতে গিয়ে তিনি সস্তা কিন্তু কোয়ালিটি সম্পন্ন কোম্পানির শেয়ারই কিনতেন এবং সেগুলোকে ভালো দামে পরবর্তীতে বিক্রি করতেন।


কিন্তু একটা সময় গিয়ে এমন কিছু শেয়ার তিনি করলেন যেগুলো বাজারে বিক্রি করতে না পারলেও তার নিজের কোম্পানির মধ্যে Compound effect'র  মাধ্যমে তিনিই বিলিনিয়ার থেকে মাল্টি-বিলিনিয়ারে পরিণত হলেন।


আর তার এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে আমেরিকান এক্সপ্রেস,কোকাকোলার  মতো বড় বড় কোম্পানিও যুক্ত ছিল।আর ঠিক এভাবেই তিনি "সিগার বাট ইনভেস্টিং"থেকে কোয়ালিটি ইনভেস্টিংয়ের দিকে তার ব্যবসার মোড়কে ঘুরিয়ে দেন।কিন্তু তিনি এর মধ্যেই একটি  সস্তা কোম্পানির শেয়ার কিনে ফেলেন যে কোম্পানিটির নাম ছিল"Berg shayar have tho e।"যদিও এই কোম্পানিটির কোয়ালিটি খুব বেশী খারাপ ছিল কিন্তু শেয়ারটি  কিনতে পেরেছিলেন তিনি সস্তা দামে।


একটা সময় গিয়ে এই কোম্পানিটির অনেকগুলো শেয়ার  কিনে ফেলার কারণে তিনি এই কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হয়ে গেলেন।এই কোম্পানিতে তিনি অনেক বেশি পরিশ্রম এবং মেধা খাটিয়েছিলেন।এরপরেও কোনোভাবেই তিনি এই কোম্পানিটির কোয়ালিটিকে উন্নত করতে পারেন নি।


যেকারণে কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে তিনি সেই টাকা অন্য একটি কোম্পানিতে ইনভেস্ট করেন।কিন্তু আশ্চর্যের কথা এই যে বাফেট তার জীবনে যত টাকা ইনকাম করেছেন সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইনকাম করেছিলেন এই টেক্সটাইল কোম্পানি বিক্রি করার মাধ্যমে।এমনকি এই টাকা তিনি যে কোম্পানিতে ইনভেস্ট করেছিলেন সে কোম্পানিটি এখন সম্পূর্ণ ইনভেস্টিং কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।


আপনি যদি ওয়ারেন বাফেটের ইনকামের গ্রাফ চার্ট এনালাইসিস করে থাকেন তাহলে আপনি দেখতে পাবেন সেটা শুধুমাত্র Compound Effect'য়ের কারণেই হয়েছে। কারণ তিনি গত বেশ  কয়েক বছর ধরে সবচেয়ে বেশি প্রফিট করেই চলেছেন। 


চার্লস ডি বলেছেন"জীবনে যে কোনোকিছু করার জন্য খুব বেশি পরিমান আইডিয়ার দরকার হয় না।সিম্পল আইডিয়া নাও কিন্তু সেটাকে সিরিয়াসলি ভাবো।দেখবে জীবনে তুমিও অনেক কিছু করতে পেরেছো।









Post a Comment

0 Comments