8 inspirational stories to fulfill your dreams in bangla

fulfill your dreams in bangla

8 inspirational stories to fulfill your dreams in Bangla

কোনো কিছু একেবারে শেষ হয়ে যাওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে ঝুঁকি নেওয়ার বিষয়টি জোরালোভাবে চলে আসে।কারণ এর থেকে ভালো কিছুও ঘটে যেতে পারে।তাই কোনো কোনো সময় ঝুঁকি নেয়াটাই সঠিক সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়ায়। জগতের বেশির ভাগ সফল মানুষের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে কিন্তু এর বিপরীতেও যুক্তি দেখানো যায়।প্রশ্ন করা যায় কোন ক্ষেত্রে সাফল্যের ক্ষীণ হাতছানি থাকা সত্বেও কেন আপনি সবটুকু উজাড় করে দিয়ে ঝুঁকি নিতে যাবেন?আসলে কোনো কিছুর শেষ চেষ্টা করে সেখান থেকে সফলভাবে বাঁচিয়ে রাখতে পারা এক ধরনের সুখকর অভিজ্ঞতার জন্ম দেয়।



 অনেকটা ভোর দেখার আগে গভীর রাতে ভীত হওয়ার মতো।একেবারে বিরূপ পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর ঘটনা আপনাকে নিজের সামর্থের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। তারপর আপনার আত্মবিশ্বাস সামনে চলার পথের পাথেয় হয়ে দাঁড়াবে। পোস্টটি  শুরু করার আগে আপনার কাছে একটি প্রশ্ন। আপনার জীবনে এমন কি কোন ঝুঁকি নিয়েছেন সময় বিচারে যেটা আপনার কাছে এখন সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল বলে মনে হয় অথবা যে ঝুঁকিটি  না নিলে আপনি আপনার জীবনে অনেক বড় কিছু থেকে বঞ্চিত হতেন।অথবা এমন কোন ঝুঁকি  যে ঝুঁকি আপনার জীবনে নেওয়া উচিত ছিল বলে আপনার মনে হয়েছে কিন্তু আপনি ভয় পেয়ে সেটি নেন নি। আপনি এখনই কমেন্ট করে আপনার অভিজ্ঞতার কথা জানান।


ঝুঁকি এবং সফলতার উদাহরণে সফল ব্যক্তিদের কথা প্রথমে আসে।কারণ সফল হওয়ার আগে তারাও আমাদের মত সাধারন মানুষ ছিলেন।কিন্তু নিজের সিদ্ধান্ত আর ঝুঁকি নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর কারনে তারা আজ এক একটি দৃষ্টান্ত।আজ রয়েছে এমন আটজন ব্যক্তির কথা।



 চলুন তাহলে শুরু করা যাক প্রথমেই ইলন মাস্ক কে দিয়ে। ইলন মাস্ক "টেসলা মটরস ও স্পেস এক্সের "প্রতিষ্ঠাতা। এই প্রতিষ্ঠান দুইটির চমৎকার সাফল্য তাকে বিশ্বের ১২তম ধনী ব্যক্তিতে পরিণত করেছে।কিন্তু সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছানোর আগে তিনি অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন।নিজের প্রতিষ্ঠিত করা প্রতিষ্ঠান পেপালের লভ্যাংশ থেকে কিছু মূলধন নিয়ে নিজের আগ্রহ থেকে নতুন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।মঙ্গল গ্রহের সত্যিকারের একটি কলোনি স্থাপন তার স্বপ্ন ছিল।এর ফলে তিনি সুলভ মূল্যে সেবা দিতেন। 


elon musk
Elon musk


এভাবে স্পেস এক্সের  যাত্রা শুরু। যাইহোক কোম্পানিটির প্রথম তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ ব্যর্থ হয় এবং দেউলিয়া হওয়ার পথে চলে যায়। এমন পরিস্থিতিতে কেবল একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ এর জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ছিল।ইলন এই অর্থ দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ না করে অন্য কিছুতে বিনিয়োগ করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করেননি। তিনি চতুর্থবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেন এবং সফল হন।ইলনের  আরেকটি শখ ছিল নবায়নযোগ্য শক্তি দিয়ে পরিচালিত গাড়ি। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দার সময় টেসলা  তাদের প্রথম গাড়ি বাজারে আনে।কিন্তু বাজার দাম দাঁড়ায় প্রত্যাশিত দামেরও দ্বিগুন। ফলে টেসলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। কিন্তু মার্কেটিং এবং পজেটিভ রিভিউয়ের  মাধ্যমে এটি বাজার ধরে রাখে।


জেফ বেজস 

jeff bezos
Jeff Bezos


কম্পিউটার বিজ্ঞানের ডিগ্রি নেওয়ার পরে জেফ "ওয়াল স্ট্রিটয়ের" অনেকগুলো ফার্মে কাজ করেছেন। এর সুবাদে ১৯৯০ সালে তিনি সবচেয়ে কম বয়সে কোন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচিত হন।সে সময় আকর্ষণীয় বেতন, চাকরির স্থায়িত্ব,পদমর্যাদাসহ সবকিছু তার কাছে ছিল কিন্তু তিনি চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন একটি পরিকল্পনা হাতে নিলেন।তিনি নিজের ব্যবসা শুরু করতে চাইলেন। নতুন ব্যবসার জন্য সিয়াটলে বসবাস শুরু করেন এবং সেখান থেকে Amazon.com তৈরীর জন্য কাজ শুরু করেন। শুরুর দিকে এটি কেবল একটি অনলাইন বুক ষ্টোর ছিল।কাজ শুরুর মাত্র দুই মাসের মধ্যে এই স্টোরের বিক্রি ২০ হাজার ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। বর্তমানে Amazon.com অনলাইন শপ'য়ের  সবচেয়ে বড় স্থান দখল করে আছেন। এই সফলতার ফলে জেফ এখন সম্পদশালীদের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন।



রবিন চেজ 

Robin chase
Robin Chase


নিজের পরিকল্পনা আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটি দৃষ্টান্ত রবিন চেজ।রবিন চেজ ও তার বান্ধবী এনতাজি ড্যানিয়েলস ইন্টারনেটভিত্তিক কার শেয়ারিংয়ের একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।প্রথমে বাঁধা হয় অপর্যাপ্ত পরিমান পুঁজি। অন্যদিকে সে সময় রবিনের জন্য একটি ব্যবসা শুরু করার জন্য পুঁজি করা ছিল কঠিন একটি কাজ ।দ্বিতীয় বাঁধা হয় ব্যবসার প্রসার।কারণ নব্বই দশকের দিকে ইন্টারনেট প্রসার তেমন ছিলো না।আরেকটি প্রধান কারণ অপরিচিত কারো কাছে একজন গাড়ি শেয়ার করতে চাইবে না।এতকিছু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে রবিন ২০০০সালে জীপ কার শুরু করেন।মাত্র দুটি গাড়ি নিয়ে শুরু করা ব্যবসা আজ নয় হাজার গাড়িতে এসে দাঁড়িয়েছে। 



বিল গেটস 

বিল গেটস এর স্বপ্ন ছিল সবার কাছে কম্পিউটার টেকনোলোজি পোঁছে দেয়া। হার্ভার্ড থেকে ড্রপ আউট হওয়া এই  কিংবদন্তির জন্য তা করা খুব কঠিন ছিল।কেননা তৎকালীন সময়ে স্টিভ জবস বিল গেটস এর সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। জবসের apple তখন  কম্পিউটার টেকনোলজিতে ইতিমধ্যে বাজার দখল করে আছে। কিন্তু বিল গেটস তাই বলে পিছপা হলেন না। তিনি পার্সোনাল কম্পিউটারের সফটওয়্যার তৈরির মাধ্যমে বাজারে প্রবেশ করতে চাইলেন।তিনি বিশ্বাস করতেন এর মাধ্যমে apple'র সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা সম্ভব। তার প্রতিষ্ঠা করা মাইক্রোসফ্ট বর্তমানে অন্যতম টেকনোলজি জায়েন্ট হিসেবে পরিচিত। শুধু তাই নয় বর্তমানে বিল গেটস বিশ্বের সবচেয়ে সম্পদশালী ব্যক্তি।


ল্যারি ইলিসন 

কম্পিউটারের উপর মূল দক্ষতা অর্জনের পর ল্যারি ইলিসন ও তার দুইজন সহকর্মী ১৯৭৭ সালে সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট ল্যাবরেটরিজ নামে একটি সফটওয়্যার কোম্পানি শুরু করেন।পরবর্তীতে এর নাম পরিবর্তন করে "ওরাকল সিস্টেম কর্পোরেশন"রাখা হয় ।১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠানটি হিসেবের গরমিলের কারণে একরকমের দেউলিয়া হতে থাকে। এছাড়া সাথে যুক্ত হয় অব্যবস্থাপনা ও শেয়ারবাজারে দরপতন। কিন্তু ল্যারি থেমে থাকেনি।তিনি নতুন টিম গঠনের মাধ্যমে পুরো ক্ষতি পুষিয়ে নেয় এবং একইসাথে লঞ্চ করেন ওরাকল সেভেন।



ভেরা ওয়াং 

ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সফল সময় পেশা পরিবর্তন একটি ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত। স্ক্যাটিং ক্যারিয়ারের পাশাপাশি তিনি ভোগ ম্যাগাজিনের কাজ শুরু করেন। এক বছরের মধ্যে তিনি সিনিয়র ফ্যাশন এডিটর হিসেবে পদোন্নতি পান।১৫ বছর এই ম্যাগাজিনে কাজ করার পর তিনি চাকরি ছেড়ে দেন এবং রেফেল লরেনের সাথে ডিজাইন ডিরেক্টর হিসেবে কাজ শুরু করেন। তারপর বাজার পর্যালোচনা করে তিনি দেখলেন তার তৈরি করা পোশাকগুলো সকলের জন্য উপযোগী নয়।এই ব্যর্থতা তাকে হতাশায় ঘিরে ধরে।১৯৯০ সালে নিউইয়র্কের "ম্যানিসন এভেন্যুয়ের"কার্লাইল হোটেলে তিনি বিয়ের পোশাকের ডিজাইন নিয়ে নিজের ব্যবসা শুরু করেন। ধীরে ধীরে তার ব্যবসার প্রসার হয়।বিয়ের পোশাকের ডিজাইনে তিনি নিজের স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হন।



ড্রিউ হাউস্টোন 

আত্মবিশ্বাসের আরেকটি মহিমার নাম ড্রিউ হাউস্টোন।বাজারে আসার আগেই তিনি প্রতিযোগিতা ছুড়ে দেন অ্যাপেলের দিকে। অ্যাপেলের সার্ভিস থেকে ভালো কিছু আসছে বলে আশ্বস্ত করেন।ড্রিউ হাউস্টোন ও তার সহকর্মী বিভিন্ন ডিভাইসে ফাইল শেয়ারের জন্য সফটওয়্যার তৈরির পরিকল্পনা করেন। ঠিক সে সময়ে স্টিভ জবস "আই ক্লাউড" নামে একই ধরনের সফটওয়্যার তৈরির পরিকল্পনা করছিলেন। ড্রিউয়ের "ড্রপ বক্স"  বাজারে আসলে "আই ক্লাউডের" ব্যবসায় ঘাটতি পড়ে । বর্তমানে "ড্রপ বক্স" সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি ফাইল শেয়ারিং সাইট ।এর ব্যবহারকারী বর্তমানে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন এর মত।



রিচার্ড ব্র্যানসন 

রিচার্ড ব্র্যানসন  উদ্যোক্তা মহলে খুবই পরিচিত একটি নাম।স্টুডেন্টস ম্যাগাজিন থেকে শুরু করা ব্যবসা ভার্জিন রেকর্ডসে উন্নীত হলে তিনি  কর ফাঁকির অভিযোগে অভিযুক্ত হন।এসময় তার মা বাড়ি বন্ধক রেখে সে ঋণ পরিশোধ করেন। পরবর্তীতে তিনি ১৯৮৪ সালে এয়ারলাইনস ব্যবসায়ের  সাথে নিজেকে যুক্ত করেন। এটা তার জন্য অনেক কঠিন একটি সিদ্ধান্ত ছিল।কেননা সেই সময় ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের ব্যবসা তুঙ্গে ছিল।যার কারণে তিনি ব্যবসায়ে খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পারেননি ।পরবর্তীতে তিনি ৪৯ শতাংশ শেয়ার সিঙ্গাপুর এয়ারওয়েজের কাছে বিক্রি করে দেন।বর্তমানে তার ভার্জিন গ্রুপ বিশ্বের ৩০টি দেশে ২০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে।


ঝুঁকি আমাদের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।প্রতিকূল পরিবেশে ঝুঁকি নিয়ে সফল হলে সেই সাফল্য পূর্ণতা পায় ।এছাড়া এসময় নিজের সামর্থ্যের  সর্বোচ্চ ব্যবহার করা যায়।





Post a Comment

0 Comments