Make your place in the top 1% of people in bangla







Make your place in the top 1% of people


সেরা ১% মানুষের মধ্যে আপনার স্থান তৈরি করুন


একবার এক রাজা বুদ্ধি করে তার সিপাহিদের সাহায্য নিয়ে একটা রাস্তার মাঝখানে বড় একটা পাথর ফেলে রেখে পাশের একটি ঝোঁপের আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে পড়লেন ।এটি দেখার জন্য যে সেই রাস্তা দিয়ে যারা যাতায়াত করেন তাদের সেই পাথরটাকে রাস্তার মাঝখানে পড়ে থাকতে দেখে কেমন রিয়াকশন হয়। তো একে একে সে রাস্তায় রাস্তায় লোক আসতে শুরু করলো।কেউ কেউ তো চুপচাপ পাথরটার পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেল,তো কেউ কেউ আবার রাস্তার এই দুরবস্থার জন্য রাজার নামে গালাগালি দিতে দিতে চলে গেল।




এভাবে ৯৯ জন পাথরটির পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার পর একজন দরিদ্র চাষী ঝুড়িতে করে মাথায় সবজি নিয়ে সেই রাস্তায় এসে উপস্থিত হলো।রাস্তার মাঝে পাথর টা পড়ে থাকতে দেখে সেই চাষী তার মাথার ঝুড়িটাকে নিচে নামিয়ে রেখে অনেক কষ্ট করে একাই গায়ের জোর লাগিয়ে পাথরটাকে রাস্তার একধারে সরিয়ে দিল।পাথরটা সরিয়ে দেওয়ার পর সে চাষী যখন পিছন ফিরে তার ঝুড়িটা আবার মাথায় তুলে নেওয়ার জন্য এগিয়ে গেল তখন সে দেখল, যেখানে পাথরটা পড়েছিল সেখানে এখন এক থলি স্বর্ণমুদ্রা পড়ে রয়েছে এবং সাথে রাজার নিজের হাতে লেখা একটা চিঠি।




"এই পাথরটি যে সরাবে একশত স্বর্ণমুদ্রা রাজার তরফ থেকে তার জন্য উপহার।"ফলে একশত স্বর্ণমুদ্রা পেয়ে সেই গরিব চাষী তার গ্রামের অন্যতম একজন ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হলো।তো লক্ষ্য করুন চাষিটি কি করেছিল যা তাকে ধনী ব্যক্তিতে পরিণত করেছিল?এই দরিদ্র চাষী সেটাই করেছিল যা ৯৯ জন লোক করেন নি।ঠিক এমনি আপনি যদি পৃথিবীর টপ ১% লোকেদের মধ্যে আসতে চান তবে আপনাকে সেই কাজগুলো করতে হবে যেগুলো ৯৯% লোক করেন না।




তো টপ ১% লোকেদের সেই কাজগুলো কি কি যা ৯৯% লোকেরা করেন না।সেটি আজ এই লিখাতে দুই ভাই নিহাল ও জারিফের উদাহরন দিয়ে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।




একই কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে নিহাল ও জারিফ দুজন'ই একইসাথে একই কোম্পানিতে ১০০০০ টাকার মাসিক বেতনের একটা চাকরি পেল।নিহাল আর জারিফ দুজনেই জানতো যে এসেট মানে হলো এমন কিছু যা পকেটে টাকা নিয়ে আসে আর লিয়াবিলিটিজ মানে হল এমন কিছু যা পকেট থেকে টাকা বের করে নিয়ে যায়। কিন্তু তবুও প্রথম মাসের বেতন পাওয়ার পর নিহাল কি করলো আগের জমানো ৫০০০টাকা আর বেতন পাওয়া ১০০০০ টাকা এই পুরোটা মিলিয়ে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে একটা দামি স্মার্টফোন কিনলো ।




যে ফোনটা এক কি দু'বছর পরে নষ্ট হয়ে যেতে চলেছে।মানে এই ফোনটা আগামী দু'বছরে নিহালের পকেট থেকে ১৫ হাজার টাকা বের করে নিয়ে যাবে। মানে টাকা ইনকাম করা শুরু করার সাথে সাথে নিহাল তার লিয়াবিলিটিজ বাড়াতে শুরু করে দিল।ফলে এভাবে আসতে আসতে নিহাল ৯৯% লোকেদের দিকে যাত্রা শুরু করল।অন্যদিকে জারিফও প্রথম মাসের বেতন পাওয়ার পর একটা ফোন কিনলো কারণ জারিফেরও একটা ফোন দরকার ছিল।




কিন্তু ১৫ হাজার টাকা দিয়ে না,জারিফ ৫০০০ টাকা দিয়ে একটা ফোন কিনলো যেটা দিয়ে জারিফের যা যা দরকার সেগুলো সবই মিটে যাবে ।এবং বাকি পাঁচ হাজার টাকা জারিফ একটা বিজনেসে ইনভেস্ট করল,যেখান থেকে জারিফের এই ৫ হাজার টাকাটা দুই বছর পরে হয়তো ১৫০০০ টাকায় পরিণত হবে।মানে টাকা উপার্জন করা শুরু করার সাথে সাথে জারিফ নিজের এসেট বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করতে শুরু করে দিল।ফলে আসতে আসতে জারিফ টপ ১% লোকেদের দিকে যাত্রা শুরু করলো।তাহলে স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার ওয়ান-Build assets, not liabilities.




নিহাল এবং জারিফ দুজনেই এটি জানতো যে Invest করার মানে হলো একটা সময়ের পর আমি সেখান থেকে পজিটিভ কিছু রিটার্ন পাবো,আর Spend করার করার মানে হল একটা টাইমের পর আমি সেখান থেকে নেগেটিভ কিছু রিটার্ন পাবো।কিন্তু তবুও নিহাল প্রতিদিন ৫/৬ ঘণ্টা তার সেই নতুন ফোনের পিছনে অকারণে জাস্ট এন্টারটেইনমেন্ট-এর জন্য স্পেন্ড করতে শুরু করলো। নিহাল খুব ভালো করেই জানত যে ভবিষ্যতে এর রিটার্ন কি!কোমরে ব্যথা,ঘাড়ে ব্যথা,অলস ভাব,ব্রেইন ডাল হয়ে যাওয়া অর্থাৎ এটা জানা শর্তেও যে টাইম স্পেন্ড করলে তার রিটার্ন নেগেটিভই আসে তবু নিহাল সেই একই কাজ করে যেতে থাকল।




ফলে আস্তে আস্তে নিহাল ৯৯% দলের লোকেদের দিকে এগোতে থাকলো। অন্যদিকে জারিফ দিনে ঘরে ৫/৬ ঘন্টা নিজের একটা বিজনেস গড়ে তোলার পিছনে এবং কনফিডেন্টলি ইংলিশে লোকেদের সাথে কথা বলতে পাড়ার স্কিলটা নিজের মধ্যে ডেভেলপ করার পিছনে ইনভেস্ট করতে শুরু করল। কারণ জারিফ জানতো যে টাইম ইনভেস্ট করলে ভবিষ্যতে তার রিটার্ন কি হয়। আস্তে আস্তে জারিফ কাস্টমারের সাথে ডিল করার স্কিলে একজন এক্সপার্ট হয়ে উঠতে লাগলো।ফলে তার নিজের পার্ট টাইম বিজনেসে উন্নতির সাথে সাথে জারিফ যে কোম্পানিতে চাকরি করত সেখানেও সে একের পর এক প্রমোশন পেতে থাকলো।তো স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার টু- Invest time, don't spend it.




নিহাল এবং জারিফ দুজনই এটা জানতো যে Happiness এর উপর করা করা লঙ্গেস্ট একটি স্টাডি থেকে এটা জানা গেছে য, একজন মানুষের লাইফে খুশি থাকা সব থেকে বেশি নির্ভর করে তার জীবনের সম্পর্কগুলোর উপর। অর্থাৎ একজন মানুষের জীবনে খুশি থাকার জন্য আশেপাশের মানুষগুলোর সাথে ভালো সম্পর্ক থাকাটা সবথেকে বেশি জরুরি ।কিন্তু সমস্যাটা হলো নিহাল কারো বেশি ক্লোজ হলেই সেই মানুষটার সাথে নিহালের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু হয়ে যেত। এর কারণ কি ছিল? কারণ নিহাল সব সময় সামনের জনের কাছ থেকে খুশি নিংড়ে নেওয়ার চেষ্টা করত।




অর্থাৎ নিহালের সবসময় মাইন্ডসেট থাকতো যে সামনের জন তাকে খুশি করবে যেখানে জারিফ ঠিক তার উল্টোটা করত।জারিফের সবসময় মাইন্ডসেট থাকতো সামনের জনকে খুশি করার অর্থাৎ জারিফ সামনের জনের কাছ থেকে খুশি নিংড়ে নেয়ার বদলে নিজের খুশিটাকে সামনের জনের মধ্যে বিলিয়ে দিতো।জারিফ Happiness শেয়ার করাই বিশ্বাস করত,সামনের জনের থেকে Happiness extract করায় না। যার ফলে জারিফ যার সাথেই ক্লোজ হতো তখন তার সাথে জারিফের সম্পর্ক দিন দিন আরও গভীর এবং বন্ডিং আরো স্ট্রং হতে থাকতো।তো স্মার্ট আইডিয়া নাম্বার থ্রী-Share happiness, don't extract.





এভাবে ১৫ বছর চলার পর নিহালের অবস্থা কিছুটা এরকম দাঁড়ালো-১৫ বছর আগে নিহাল যখন চাকরিতে জয়েন করেছিল তখন তার ফাইন্যান্সিয়াল কন্ডিশন যেমন ছিল আজ ১৫ বছর পরও সেই একই আছে।সাথে বিভিন্ন হেলথ ইস্যুর জন্য নিহালকে মাসে হাজার হাজার টাকা ঔষধের পিছনে খরচ করতে হয়। তার উপর কারো সাথে সম্পর্ক ভাল না থাকায় এখন তার নিজেকে পৃথিবীতে ভীষণ একা বলে মনে হয়। এক কথায় এখন নিহালের নিজের জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা এসে গেছে।




অন্যদিকে ১৫বছর পর জারিফের অবস্থা কিছুটা এরকম দাঁড়ালো-১৫ বছর ধরে নিয়মিত নিজের বিজনেসের পেছনে টাইম ইনভেস্ট করায় জারিফ এখন একজন সাকসেসফুল বিজনেসম্যান ।১৫ বছর আগে সে যখন সে তার ক্যরিয়ার শুরু করেছিল তখন তার যে ফিন্যান্সিয়াল কন্ডিশন ছিল এখন সে এর চেয়ে ১০০ গুন ভালো জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছে এবং তার পরিবারের সবাই আর তার বন্ধু-বান্ধবরাও তাকে ভীষণই ভালোবাসেন।




তো আপনিও যদি জারিফের মতো টপ ১% লোকদের মধ্যে নিজের জায়গা করে নিতে চান তবে আপনাকেও ওই তিনটে স্মার্ট আইডিয়া অবশ্যই ফলো করতে হবে ।নাম্বার ওয়ান-Build assets, not liabilities.নাম্বার টু- Invest time ,Don't spend it এবং নাম্বার থ্রী -Share happiness ,don't extract it .আর যদি নিহালের মতো ৯৯%লোকেদের মধ্যে নিজের নাম লিখাতে চান তাহলে কিছু বলার নেই আপনি আপনার আশেপাশেই তার অসংখ্য উদাহরণ দেখতে পেয়ে যাবেন। কারণ সব সময় মনে রাখবেন "You have to be odd to be the number 1."


Post a Comment

0 Comments