Best 7 ways how to overcome shyness in Bangla






Best 7 ways to overcome shyness(Bangla)Best 7 ways how to overcome shyness in Bangla
Motivation in Bengali

আমাদের মধ্যে অনেকেই বাইরে কোথাও কথা বলতে বেশ লজ্জা পান।অফিসের কোনো আলোচনা সভায় বা বন্ধুদের আড্ডার আসরেও ঠিকভাবে কথা বলতে পারেন না,এরা অন্তর্মুখী স্বভাবের। এক্ষেত্রে দেখা যায় কথা বলার জন্য তারা যতটা প্রস্তুত তার চেয়ে বেশি লজ্জা বা সংকোচের কারণে নিজেদের ভেতর গুটিয়ে থাকেন।তারা তাদের প্রতিভা বা গুণগুলোকে তাদের মাঝে প্রকাশ করতে পারেন না।




নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এই সমস্যাটি প্রবলভাবে থাকে ।কিন্তু সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে এটাই হতে পারে আপনার অনেক বড় বাঁধা।কারণ কাজ করতে গেলে আপনাকে অন্যদের সাথে কমিউনিকেট করতে হবে।প্রয়োজন বুঝে তাদের সাথে নির্দ্বিধায় কথা বলতে হবে। লজ্জা একটি সুন্দর আবেগ,লজ্জা পাওয়ার অর্থ অনেকটা নিজেকে লুকিয়ে রাখা।




লজ্জার কারনে আমরা বিভিন্ন অশোভন কার্যকলাপ থেকে নিজেদের বিরত রাখি।এর যেমন কিছু ভালো দিক আছে তেমনি অতিরিক্ত লজ্জা বা সংকোচ অনেক সময় বিব্রতকর । এমনকি এই সমস্যা যেকোন মানুষের জীবনকে বিড়ম্বিত এমনকি বিপর্যস্তও করে তুলতে পারে। যদি এমন সমস্যায় আপনিও পড়ে থাকেন তাহলে আপনার উচিত দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা।




একটি কথা জেনে রাখুন প্রতিযোগিতার এই যুগে লজ্জায় নিজেকে প্রকাশ করতে না পারলে কোন ভাবেই নিজের অবস্থানকে দৃঢ় করতে পারবেন না। কেন মানুষ সামান্য কারণে লজ্জা পায় এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের "এডুকেশনাল এন্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি" বিভাগের অধ্যাপক মেহতাব খানম বলেন, লজ্জার আসলে নানা ধরন আছে।কেউ যদি মানুষের সামনে কথা বলতে লজ্জা পায় তাহলে সেটাকে শাই ফিল (Shy feel )করা বলে । 


আবার অনেকে নিজের কর্মের জন্য লজ্জা পান। একটার জন্ম বিব্রতবোধ থেকে আরেকটির অন্যায় উদ্বেগ থেকে। প্রথমটির ক্ষেত্রে বলা যায় অনেকের মধ্যেই আত্মমর্যাদাবোধের অভাব কাজ করে।তাই তারা মানুষের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা পেয়ে থাকেন ।আবার এইসব ক্ষেত্রে একধরণের উদ্বেগও থাকে যে এতো মানুষের সামনে আমি কিভাবে কথা বলব? কি বলব?যখন নিজের সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাব থাকে তখনই কেবল লজ্জা পাওয়ার ব্যাপারটি বেশি ঘটে । 


আপনি যদি মনে করেন আপনি নিজের কথা গুছিয়ে বলতে পারবেন না তাহলেই লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয় ।নিজের সম্পর্কে সচেতন না হতে পারলে এটা কাটিয়ে ওঠা খুব শক্ত।মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন অধিকাংশ বিষন্নতার ভিত্তি হচ্ছে লজ্জা।প্রতিটি মানুষই কোনো না কোনো লজ্জার স্বীকার হয়ে থাকেন । লজ্জা বা সংকোচ কাটানোর কিছু উপায় আপনাদের কাছে তুলে ধরবো। যার মাধ্যমে আপনিও সহজে সমস্যাটি কাটিয়ে উঠতে পারবেন।


1.লজ্জা পাওয়ার কারনগুলো খুঁজে বের করুন:
 
লজ্জা মানে অন্তর্মুখী স্বভাব বা নিজেকে অপছন্দ করা নয়।আপনি শুধু কিছু পরিস্থিতিতে বিব্রত হয়ে পড়েন।আপনার এই লজ্জা পাওয়ার বা সংকোচের কারণ কি তা খুঁজে বের করুন।যেমন-আমরা সবসময় নিজেকে নিয়ে আচ্ছন্ন থাকি।এমনটা তখনি হয় যখন আমরা নিজেদের নিয়ে বেশি ভাবি।কারণ আমরা সারাদিনে এটাই লক্ষ্য করি যে আমি কি করছি?কোনো ভুল কাজ বা ভুল কথা যেন বলে না ফেলি!কোন কাজে যেন ঝামেলা বাঁধিয়ে না বসি!তাই প্রথমেই এসব ভাবা বন্ধ করুন।




আবার আমাদের নিয়ে কেউ ভাল মন্তব্য করলে লজ্জার কারণে আমরা তার মন্তব্যটি গ্রহণ করতে পারি না।যেমন ধরুন আপনাকে কেউ বলল "আপনাকে দেখতে আজ বেশ লাগছে।"এমন অবস্থায় লজ্জায় চুপ করে না থেকে বা এড়িয়ে না গিয়ে তার মন্তব্যটি মেনে নিন এবং হাসি মুখে বলুন "ধন্যবাদ।"


কারণ যাই হোক না কেন যেকোন সমস্যা থেকে উঠে আসা সম্ভব।তাই আপনার লজ্জা পাওয়ার বা সংকোচের কারণগুলো বের করে সেগুলোর সমাধান করার চেষ্টা করুন।

2.তালিকা তৈরি করুন:
 
আপনি কোন কোন পরিস্থিতিতে লজ্জা পাচ্ছেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন।যেসব পরিস্থিতিতে আপনি কম লজ্জা পাই সেগুলোর তালিকা প্রথম দিকে লিখে রাখুন আর যেসব পরিস্থিতিতে আপনি বেশি লজ্জা পান তা তালিকার শেষের দিকে রাখুন।যেমন সবার সামনে কথা বলার ক্ষেত্রে আপনি কাদের সঙ্গে কথা বলতে বেশি লজ্জা পাচ্ছেন তার একটি তালিকা বের করতে পারেন।কাদের সাথে কথা বলতে আপনি বেশি পছন্দ করেন তাদেরও একটি তালিকা বের করে ফেলুন। 


এভাবে দশ থেকে পনেরটি পরিস্থিতির তালিকা তৈরি করে ফেললে একে একে তার উপর কাজ করা শুরু করুন।প্রথমে সহজ পরিস্থিতি গুলো জয় করার চেষ্টা করুন এতে আপনার আত্মবিশ্বাস আরো বেড়ে যাবে ।এরপর আপনি শেষের দিকের কঠিন পরিস্থিতি গুলো সহজে জয় করার সাহস পাবেন।যদি সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে আপনাকে তালিকার কোন একটি কাজ আবার করতে হয় তবে চিন্তা করবেন না।আপনার যতটুকু সময় প্রয়োজন আপনি ঠিক ততটুকু সময় নিন।




3.যা মনে আসে বলে ফেলুন:


ধরুন আপনি একটি আলোচনা সভায় বসে আছেন যেখানে আপনার পছন্দের একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে,যে বিষয়ে আপনি অনেক কিছু জানতেন।খেয়াল করে দেখবেন আপনি চাইছেন আলোচনায় অংশ নিতে।ভাবছেন দুই থেকে তিন লাইন বলবেন কিন্তু পারছেন না।বলবেন কি বলবেন না ভাবতে ভাবতে শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো আপনি বলতেই পারলেন না।আপনি নিজেকে প্রকাশ করতে লজ্জা পান বলেই এমনটা হয়।এই অপরাগতার কারণে অনেকে জানলোই না যে আপনি বিষয়টি অনেক ভালো জানেন।



এমন ধরনের লজ্জা কাটিয়ে উঠতে নিজের ঘরেই কথা বলার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। বেশি কথা বলার অভ্যাস করুন।প্রয়োজনে বন্ধুদের আসরে বেশি কথা বলুন,কেননা বন্ধুদের মাঝে ভুল বললেও সমস্যা নেই।নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলুন,নিজেকে যোগ্য করে তুলুন,লজ্জার খোলস থেকে বেরিয়ে আসুন। আপনি যদি সত্যিই লজ্জাকে কাটিয়ে উঠতে চান তাহলে যেকোনো জায়গায় আপনার যা বলতে ইচ্ছা হয় আপনি তাই বলুন।কখনোই না বলবেন না। 


মনে রাখবেন "না"শব্দটি আপনার জীবনের বড় একটি শত্রু হয়ে উঠতে পারে।তাই জীবন থেকে "না" শব্দটি বাদ দিন।আপনি বলতে পারবেন এবং নিজেকে প্রকাশ করতে পারবেন এটাই সত্য এর বিপরীতে কোন কথা'ই হতে পারে না।


4.চোখে চোখ রেখে কথা বলুন:
চোখ দিয়ে পৃথিবীর সমস্ত ভাষা বোঝা যায় এবং বলা যায় ।আপনার লজ্জা কাটাতে চোখ একটি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। কথা বলার সময় দৃষ্টি বিনিময় করতে পারেন ।আপনি চাইলে চোখ দিয়ে বুঝিয়ে দিতে পারেন আপনি কোনোভাবেই লজ্জা পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার চর্চা করুন। সে ক্ষেত্রে যে কোন বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারেন ।এতে করে আপনি আপনার আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন এবং আপনার লজ্জা সংকোচ অনেকটাই কেটে যাবে।


5.লাজুক হিসেবে মেনে নিন:
 
জীবনের যে ক্ষেত্রে লজ্জা বা অপমানের শিকার হয়ে থাকুন না কেন এটা মনে রাখবেন যে আপনি প্রথম ব্যক্তি নন যিনি এই অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।খেয়াল করলে দেখবেন আপনার অনেক বন্ধুরাও এমন পরিস্থিতির শিকার। তারা পারলে আপনি কেন পারবেন না? লজ্জা সংকোচ দূর করার একটি ভালো উপায় হল আপনি যে লাজুক স্বভাবের তা মেনে নিন ।সচেতন অসচেতনভাবে আপনি যতই এটা মেনে নিতে অস্বীকার করবেন ততই আপনার সমস্যাটি দূর করতে সময় লাগবে।




আপনি যদি লাজুক স্বভাবের হয়ে থাকেন তবে তা স্বানন্দের সাথে মেনে নিন এবং এই স্বভাবকে নিজের একটি ভালো দিক হিসেবে বিবেচনা করুন। প্রতিদিন নিজেকে বলতে পারেন হ্যাঁ আমি কিছুটা লাজুক স্বভাবের এবং আমি সেটা মেনে নিলাম। ফলে পরবর্তীতে কথা বলার সময় আপনার নিজেকে অনেকটা স্বাভাবিক মনে হবে।আপনি আর লজ্জায় এতো আরষ্ট হয়ে থাকবেন না। 


6.তুলনা করবেন না: 
নিজেকে কখনো অন্যের সাথে তুলনা করবেন না। যখন আপনি নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করবেন তখন আপনার মনে হবে অন্যেরা আপনার থেকে কাজটি ভালোভাবে করতে পারছে।কিন্তু আপনি কাজটা ঠিক মত করতে পারছেন না যা আপনাকে আরো লাজুক করে তুলবে। অন্যের সাথে তুলনা করে কোন লাভ হয় না ।যদি তুলনা করতেই হয় তাহলে আপনার পরিবারের কারো সাথে বা আপনার কাছের কোন বন্ধুর সাথে নিজেকে তুলনা করুন। তাদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন। 


তারা আপনার সাথে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলে বুঝতে পারবেন তারা এক সময়ে যে পরিস্থিতিতে ছিল আপনিও সেই একই ধাপ পার করছেন কিন্তু একটু ভিন্ন অবস্থায় ।তারা কিভাবে পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে এসেছিল বোঝার চেষ্টা করুন,তাদের সাথে নিজেকে তুলনা করুন এবং বলুন আপনিও পারেন এই পরিস্থিতি গুলো থেকে বের হয়ে আসতে।


 7.নিজের গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করুন: 
আপনি হয়তো ভালো বক্তা হয়ে কারো দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারছেন না বা কোন আসর জমাতে পারছেন না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনার কোনো গুণ নেই। আপনি কি একজন ভালো শ্রোতা? আপনি অল্প সময়ে অনেক কিছু পর্যবেক্ষণ করতে পারেন?বা আপনার কোন গুনটি অন্যদের থেকে আলাদা? আপনার মধ্যে সেই গুনটি খুঁজে বের করুন। 


যেমন-যদি আপনি একজন ভালো শ্রোতা হয়ে থাকেন তাহলে আপনি অন্যের সমস্যা সহজেই বুঝতে পারবেন এবং তার সমাধান করে দিতে পারবেন। এমন পরিস্থিতিতে আপনাকেই তাদের প্রয়োজন। তাই নিজের গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করুন ।যখন আপনি দেখবেন অন্যদের কাছে আপনি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তখন আপনার মন থেকে দ্বিধা,লজ্জা অনেকটাই কেটে যাবে এবং আপনিও লজ্জা কাটিয়ে নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরতে পারবেন। 

মনে রাখবেন নিজেকে সবার সামনে তুলে ধরতে পারা বা লজ্জা কাটানো রাতারাতি সম্ভব নয়।এজন্য সময়,প্রচেষ্টা এবং অবশ্যই নিজেকে পরিবর্তন করার ইচ্ছা থাকতে হবে।তাই আর হতাশ না হয়ে আজ থেকেই আপনার লজ্জা বা সংকোচ দূর করার চেষ্টা শুরু করুন।

Post a Comment

0 Comments