8 ways how to overcome nervousness in bangla


8 ways how to overcome nervousness in Bangla

৮টি উপায় কিভাবে নার্ভাসনেস কাটিয়ে উঠবেন

মার্ক টোয়েন বলেনপৃথিবীতে দুই ধরনের বক্তা আছে।প্রথমতঃ যারা কথা বলার সময় নার্ভাস হয়ে পড়ে দ্বিতীয়তঃ যারা সব সময় মিথ্যা বলে। চোখ বন্ধ করে একবার কল্পনা করুন তো আপনি একটি প্লেনে বসে আছেন।প্লেনটি  দশ হাজার ফুট উপরে আছে এবং আপনি সেখানে পা  ঝুলিয়ে বসে আছেন।উপর থেকে অনেক নিচে মাটি দেখা যাচ্ছে।প্রচন্ড বাতাস আপনার চারপাশে ঘুড়পাক খাচ্ছে।একটি প্যারাস্যুট আপনার পেছনে বাঁধা আছে।পেছন থেকে কেউ একজন  চিৎকার করে বলছে আপনাকে লাফ দেওয়ার জন্য।এরকম একটি চরম অবস্থায় যে কেউ নার্ভাস হয়ে পড়বে।



কিন্তু প্রতিদিন বিভিন্ন পরিস্থিতিতে আমাদের স্নায়ু এর থেকে অনেক বেশি পরিমাণে নার্ভাস হয়ে থাকে।যেমন-অচেনা কোনো  মানুষের সাথে কথা বলার সময়,জব ইন্টারভিউতে বা  গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে যাওয়ার আগে আমরা অনেক নার্ভাস হয়ে পড়ি।তখন আমাদের মনে হয় আমরা বোধহয় কাজটি সফলভাবে করতে পারব না। এমন পরিস্থিতিতে কে কে পড়েছেন আর এ অবস্থায় আপনি কিভাবে নিজেকে স্বাভাবিক ও শান্ত রাখার চেষ্টা করেছিলেন তা কমেন্ট করে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।



আসলে নার্ভাসনেস খারাপ কিছু নয় কিন্তু কখনো কখনো এই নার্ভাসনেস এড়িয়ে চলা কঠিন হয়ে পড়ে।কিন্তু কিছু পদ্ধতি চর্চার মাধ্যমে যে কেউ এটা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। দৈনন্দিন জীবনে বা বড় কোনো ইভেন্টের আগে নার্ভাসনেস জয় করতে কিছু সহজ পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।চলুন তাহলে দেখে আসা যাক সহজ পদ্ধতি গুলো কি।


পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন 

যে কাজটি করতে গেলে আপনি নার্ভাস হয়ে পড়েন সে কাজগুলো শেষ মুহূর্তে শুরু না করে আগে থেকে প্রস্তুতি নিন।এতে করে আপনি কাজটি করার জন্য তৈরি থাকবেন এবং নিশ্চিন্ত থাকবেন।যেমন-কোন মিটিংয়ে যাওয়ার আগে তার জন্য প্রস্তুতি নিন। মিটিংটি কিভাবে শুরু করবেন তা নিয়ে পরিকল্পনা করুন।মিটিংয়ের বিষয় সম্পর্কে তথ্য পয়েন্ট আউট করে রাখুন। যেন কেউ কোনো প্রশ্ন করলে আপনি তার প্রশ্নের উত্তর সহজে  দিতে পারেন। আরেকটু উদাহরণ দেওয়া যাক। ধরুন আপনি কোন জব ইন্টারভিউ দিতে যাবেন।সেজন্য আগে থেকেই সে কোম্পানি এবং কোম্পানির অবস্থান সম্পর্কে জেনে নিন যেন তাদের প্রশ্নের উত্তর আপনার কাছে আগে থেকেই তৈরী থাকে।সেখানে আপনাকে জিজ্ঞেস করতে পারে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ভেবে রাখুন এবং আগে থেকে সে প্রশ্নের উত্তরও তৈরী করে রাখুন।এতে আপনার নিজের উপর বিশ্বাস চলে আসবে এবং  আপনার নার্ভাসনেস অনেকটাই কমে যাবে।



পজিটিভ চিন্তা রাখুন 

কোন পরিস্থিতি কেমন হতে পারে সে সম্পর্কে মন সহজে একটি নেগেটিভ ধারণা গড়ে তুলতে পারে এবং এতে আমরা নার্ভাস হয়ে পড়ি।তাই কোনভাবেই মনে নেগেটিভ ধারণা আসতে দেওয়া যাবেনা।বরং সব সময় নিজেকে আস্বস্ত করুন যে আপনি যেকোন কাজ ভালভাবে করছেন।যে কাজটি আপনাকে নার্ভাস করে সে কাজটি বারবার করুন।কল্পনা করুন যে আপনি সহজ এবং সফলভাবে কাজটি শেষ করতে পারছেন।


যেমন ধরুন আপনি কারও সাথে দেখা করতে যাবেন।সেক্ষেত্রে মনে মনে ভাবতে পারেন যে আপনারা একে অপরের বেশ সঙ্গ উপভোগ করছেন এবং আপনার খুব ভালো একটি সময় পার করছেন।এরকম পজিটিভ চিন্তাভাবনা আপনাকে নার্ভাসনেস থেকে দূরে রাখবে।আবার ধরে নেওয়া যাক আপনাকে একটি বক্তৃতা দিতে হবে।নিজেকে কল্পনা করুন যে আপনি দর্শকদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।ভাবুন আপনি রিলাক্স হয়ে সফলভাবে বক্তৃতা দিচ্ছেন এবং সবাই আপনার বক্তৃতা উপভোগ করছে।ফলে আপনার মনের ভীতি অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।


নিজের শ্বাস প্রশ্বাসকে অনুসরণ করুন 

নেগেটিভ ধারণাগুলো সবসময় আমাদের মস্তিষ্কে ঘুরতে থাকে।ফযে এই   ধারণা থেকে বের হওয়া সহজ হয়ে ওঠে না।কিন্তু আপনার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস খুবই শক্তিশালী একটি অস্ত্র যা আপনাকে আপনার মূল কাজে ফিরে আসতে সাহায্য করবে। তাই পরবর্তী সময়ে যখন আপনি নার্ভাস হয়ে পড়বেন তখন আপনার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দিন। আপনাকে জোর করে নিশ্বাস নিতে হবে না শুধু লক্ষ্য করুন আপনি কতটুকু সময় ধরে নিঃশ্বাস নিচ্ছেন।


এই  সময় আপনি কি অনুভব করছেন তা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রতি মনোযোগ রাখুন ।শ্বাস ত্যাগ করার সময় আপনার শরীরে যা অনুভব করছেন এবং এমনকি আমরা শ্বাস প্রশ্বাসের মধ্যবর্তী ক্ষণস্থায়ী অবস্থার প্রতিও লক্ষ্য রাখুন।নার্ভাসনেসকে জয় করার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি বেশ কার্যকর।এটি আপনার মনকে শান্ত করতে এবং অস্থিরতা কমাতে সাহায্য করবে।



চর্চা করুন 

এটি সত্য যে "The more you do something ,the better you get."সে সুস্বাদু মাছের তরকারি রান্নার ক্ষেত্রে হোক বা পিয়ানো বাজানোর ক্ষেত্রে হোক বা কোনো আলোকচিত্র গ্রহণ করার  সময় হোক আপনি যত বেশি চর্চা করবেন ততই কাজিটি নিখুঁত হবে।হাইলি ক্যাপস্যালাসি বলেন," যদি আমি  যথেষ্ট পরিমানে চর্চা না করি, তাহলে আমি নার্ভাস হয়ে পড়ি।"  যে কাজগুলো আপনাকে নার্ভাস করে তোলে সে কাজগুলো বারবার চর্চা করুন।কারন "Practice makes a man perfect."এতে আপনি আরো বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং দক্ষ হয়ে উঠবেন এবং এটি আপনার নার্ভাসনেস কমাতে সাহায্য করবে।


আপনার যত অভিজ্ঞতা হবে ততই আপনি কাজটির  সাথে মানিয়ে নিতে পারবেন।যেমন-যদি আপনি সবার সামনে কথা বলতে গেলে নার্ভাস হয়ে পড়েন তাহলে সবার সামনে কথা বলার সুযোগ কাজে লাগান।এক্ষেত্রে সুযোগ থাকলে ভলান্টিয়ার হিসেবে ক্লাসে কথা বলতে পারেন। বিভিন্ন জনসভায় অংশ নিন এবং আপনার মতামত গুলো তুলে ধরুন। আপনি যত চর্চা করবেন ততই আপনার নার্ভাসনেস কমতে থাকবে।



শরীরকে রিলাক্স রাখুন

নার্ভাসনেস কমানোর জন্য নিজের শরীরকে রিলাক্স রাখুন।যে কাজটি করতে গিয়ে আপনি নার্ভাস হয়ে পড়ছেন সে কাজটি করতে আপনার রিলাক্স হওয়া প্রয়োজন।এক্ষেত্রে অন্ধকার এবং শান্ত একটি  ঘরে বসে নিজের মনকে স্থির করার চেষ্টা করুন।আপনার শরীরকে রিলাক্স করতে একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করুন।পেশীগুলোকে একদম টানটান করে শিথিল করে নিন। এভাবে আপনার কাঁধের এবং হাতের পেশীগুলোকে  টানটান করে আবার শিথিল করুন। আবার অস্থির মনকে স্থির করতে এবং নার্ভাসনেস দূর করতে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটিও করতে পারেন।



প্রত্যাখ্যানকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিন

প্রত্যাখ্যাত হলে কারো'ই কখনো ভালো লাগে না।এরকম অভিজ্ঞতা সাধারণত আমাদের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলে।কারণ আমরা নিজেরাই প্রত্যাখ্যান হওয়াকে খারাপ হিসেবে ভেবে নেই। আপনার চারপাশে খুঁজে দেখলে এমন কাউকে খুঁজে পাবেন না যে কখনো জীবনে প্রত্যাখ্যাত হয়নি।আসলে প্রত্যাখ্যানের ভয়ে  সবকিছু এড়িয়ে  চলাকে প্রকৃতপক্ষে বেঁচে থাকা বলেনা।


প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয় নার্ভাসনেসকে আরো বাড়িয়ে তোলে।কিন্তু যদি তা আপনি ভেবে নেন  প্রত্যাখ্যাত হওয়া খারাপ কিছু নয় তাহলেই  আপনি আপনার নার্ভাসনেসকে জয় করতে পারবেন।প্রত্যাখ্যানের মানে এই নয় যে আপনি আপনার কাজে যথেষ্ট পারদর্শী নন বা এটি আপনার কর্মদক্ষতাকে কমিয়ে দেবে।বরং মাঝে মাঝে প্রত্যাখ্যাত হওয়াকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে পরবর্তীতে আরো ভালোভাবে কাজটি করার চেষ্টা করুন।কারণ আমরা সবাই জানি"Failure is the pillar of the success."



সাহসী হন 

যেকোনো পরিস্থিতিতে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার থেকে নিজেকে সাহস     দেয়া অনেক সহজ।যদি আপনি বুঝতে পারেন যে আপনার মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব আছে এবং কিভাবে নিজের আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে তুলবেন তা আপনার জানা নেই তবে এটি আপনাকে আরো বেশি নার্ভাস করে তুলবে। এই ক্ষেত্রে নিজেকে সাহস দিন হ্যাঁ আমি কিছুটা নার্ভাস এবং ভীত কিন্তু আমি এটা যেভাবেই হোক করবই।"আমিই পারবো" বাক্যটি আপনার নার্ভাসনেস অনেকটাই দূর করে দেবে।




লোকে কি ভাববে?এ ধারণা বাদ দিন 

আপনার হয়তো মনে হতে পারে সবাই আপনাকে লক্ষ্য করছে এবং আপনি কেমন তা বিচার করার চেষ্টা করছে।এগুলো আপনার নার্ভাসনেস আরও বাড়িয়ে দেয় ।আপনি যে কাজটি করছেন তা নিয়ে আপনি হয়তো প্রচুর ভাবছেন।তার মানে এই নয় আপনি যেটা করছেন সবাই তা নিয়ে চিন্তা করবে। আপনি যেমন আপনার কাজে ব্যস্ত তেমনি তারাও তাদের কাজে ব্যস্ত।এই ধরনের উপলব্ধিতে আপনি হয়তো নিজেকে কম গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করতে পারেন কিন্তু এতে আপনার নার্ভাসনেস জয় করাটা অনেক সহজ হয়ে যাবে এবং আপনি খুব সহজভাবেই আপনার কাজটি শেষ করতে পারবেন।


কোন পরিস্থিতিতে নার্ভাস না হয়ে উপরের টিপসগুলো অনুসরণ করুন।আশা করি এই টিপসগুলো আপনাকে আপনার নার্ভাসনেস জয় করতে   সাহায্য করবে ।আর যদি কোন একটি টিপস আপনার ভালো লেগে যায় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।


Post a Comment

2 Comments

Please don't enter any spam links in the comment box.